ইউটিউব মার্কেটিং করে ব্যবসার সেল বাড়ান কয়েকগুণ! YouTube Marketing Most Effective Guideline 2023

যদি আপনি ইউটিউব মার্কেটিং কি এবং এটি কিভাবে করতে হয় সে সম্পর্কে জানতে চান, তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনারই জন্য।

ইউটিউব হচ্ছে বর্তমান সময়ের সবচাইতে জনপ্রিয় বিনামূল্যের ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম। নিজেদের অবসর সময় কাটাতে, পড়াশোনার কাজে কিংবা নতুন কিছু শেখার জন্য ইউটিউবকে আমরা ভরসা করি চোখ বন্ধ করে। ইউটিউবে যে বিষয়েই সার্চ করুন না কেন, আপনারা কোন না কোন ভিডিও কিন্তু অবশ্যই পেয়ে যাবেন। এ কারণেই সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ইউটিউবের জনপ্রিয়তা।

তবে এখন কিন্তু শুধুমাত্র ভিডিও দেখার জন্যই ইউটিউব ব্যবহার করা হয় না। বরং ইউটিউবকে কাজে লাগিয়ে এখন অনেক ব্যবসায়ী ,ফ্রিল্যান্সার কিংবা কনটেন্ট ক্রিয়েটররা নিজেদের কাজকে প্রমোট করছেন। এই প্রোমোট করার কাজটিই মূলত ইউটিউব মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে করা হয়। আজকের লেখায় আপনাদেরকে বিস্তারিতভাবে জানাবো ইউটিউব মার্কেটিং কি, ইউটিউব মার্কেটিং কিভাবে করতে হয়, এবং এই মার্কেটিং কেন করবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত। তাহলে চলুন শুরু করা যাক। 

 

ইউটিউব মার্কেটিং কি? (What is YouTube Marketing) 

ইউটিউব মার্কেটিং কি তা বুঝতে হলে আপনাদেরকে শুরুতেই ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে একটু জেনে নিতে হবে। আপনারা নিশ্চয়ই মার্কেটিং শব্দের অর্থ জানেন। মার্কেটিং হচ্ছে কাস্টমার বা অডিয়েন্সের কাছে আপনার প্রোডাক্ট কিংবা সার্ভিসের প্রচারণা করা, যাতে করে তারা সেগুলো কিনতে আগ্রহী হন। ডিজিটাল মার্কেটিং হচ্ছে যখন মার্কেটিং করার জন্য বিভিন্ন ডিজিটাল প্লাটফর্ম যেমন: ওয়েবসাইট কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ার সাহায্য নেয়া হয়। 

ইউটিউব মার্কেটিং হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং এরই একটি অংশ। ইউটিউব মার্কেটিংকে ভিডিও মার্কেটিংও বলা হয়ে থাকে। কারণ এ মার্কেটিংয়ে ভিডিওর মাধ্যমে কোন একটি বিজনেসের পণ্য ও সার্ভিসের মার্কেটিং করা হয়ে থাকে। 

যেমন ধরুন, আপনার একটি মেকআপ পণ্যের বিজনেস আছে। এখন আপনি যদি এ পণ্যগুলোর গুণাবলি নিয়ে হাই কোয়ালিটি ভিডিও তৈরি করে ইউটিউবে পোস্ট করেন, তাহলে সেটিকে ইউটিউব মার্কেটিং বলা যেতে পারে। কারণ আপনি আপনার মেকআপ বিজনেসের সেল বাড়ানোর জন্যই ইউটিউবে মার্কেটিং করছেন। 

এখনকার সময়ে বেশিরভাগ বিজনেসেরই ইউটিউবে একটি করে চ্যানেল থাকে, যে চ্যানেলে তারা নিয়মিতভাবেই নিজেদের বিজনেস এর পণ্য সম্পর্কিত ভিডিও পোষ্ট করে। শুধুমাত্র ব্যবসাই বা বলছি কেন, এখনকার দিনে বিভিন্ন কোম্পানি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রেস্টুরেন্ট, হোটেল, রেস্টুরেন্ট ওউনাররাও নিজেদের প্রতিষ্ঠানের প্রচারণা চালাতে ইউটিউব মার্কেটিংয়ের সাহায্য নিয়ে থাকে। 

এর পাশাপাশি বর্তমানে অনেক ফ্রিল্যান্সার রয়েছেন, যারা নিজেদের পছন্দের ক্লায়েন্ট খুঁজে পাওয়ার জন্য ইউটিউবে নিজেদের সার্ভিসের মার্কেটিং করে থাকেন। এছাড়াও যারা কনটেন্ট ক্রিয়েশন সেক্টরে কাজ করেন, তারাও নিজেদের ফলোয়ার ও অডিয়েন্স বৃদ্ধি করার জন্য ইউটিউবে মার্কেটিং করেন। আশা করি ইউটিউব মার্কেটিং কি তা সম্পর্কে আপনাদের মনে আর কোন প্রশ্ন নেই। 

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের অন্যান্য সেক্টরের সাথে ইউটিউব মার্কেটিংয়ের মূল পার্থক্য হচ্ছে এই মার্কেটিং করতে গেলে পরিশ্রম তুলনামূলকভাবে কিছুটা বেশি করতে হয়। কারণ যেহেতু ভিডিওর মাধ্যমে মার্কেটিং করা হচ্ছে, তাই আকর্ষণীয়ভাবে ভিডিও শুট করা, এডিট করা ইত্যাদি কাজগুলো করতে হয়। সেইসাথে ইউটিউবে মার্কেটিং করতে চাইলে ইউটিউব অ্যাডস, ইউটিউব এসইও ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কেও দক্ষতা থাকতে হয়।

Read More

ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট হয়ে আয় 2023: ঘরে বসেই প্রতিমাসে আয় করুন হাজার হাজার টাকা!

ইউটিউব মার্কেটিং কেন করবেন? 

ইউটিউব মার্কেটিং কি তা তো জেনে নিলেন, চলুন এবার জেনে নেয়া যাক ইউটিউব মার্কেটিং কেন করবেন সে সম্পর্কে। 

আপনারা নিশ্চয়ই অবগত রয়েছেন বর্তমান সময়ে মানুষের হাতে সময় অনেক কম। কমবেশী সবাই প্রতিদিন নিজেদের কাজে অত্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করেন। এ কারণে কোনো পণ্য সম্পর্কে লেখা তাদের পড়ে দেখার সময় নেই। সেই সাথে এখন অনেকেই পণ্যের বর্ণনা পড়ে দেখার চাইতে পণ্যটি সম্পর্কে ভিডিও দেখে নিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। তাই যদি নিজের বিজনেসের সেল বাড়াতে চান, তাহলে ইউটিউব মার্কেটিং দারুণ কাজে আসে। কারণ যখন পণ্যের বর্ণনা লেখার পাশাপাশি ভিডিও তৈরি করবেন তখন অনেক বেশি মানুষ আপনার ওই ভিডিওটি দেখবেন, যা থেকে সেল বাড়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে। 

একইসাথে আরো বলা যায়, যে কোন বিষয় সম্পর্কে জানতে গুগলের পাশাপাশি এখন মানুষ ইউটিউবেরও সাহায্য নেয়। তাই ইউটিউব এখন হয়ে উঠেছে অন্যতম আরেকটি জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিনের মতো। একারণেই যদি সঠিক উপায়ে অনুসরণ করে ইউটিউবে মার্কেটিং করতে পারেন, তাহলে ভাল আউটপুট পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। 

এর পাশাপাশি ইউটিউবে মার্কেটিং করার আরেকটি সুবিধাজনক দিক হচ্ছে ভিডিওতে কোন প্রোডাক্ট কিংবা সার্ভিস সম্পর্কে তুলনামূলক সহজ ভাষায় সবাইকে বোঝানো যায়। তার ওপর যদি আপনি আকর্ষণীয় ভাবে কথা বলে প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের ভালো দিকগুলো উপস্থাপন করতে পারেন, তাহলে খুব সহজেই আপনার টার্গেট অডিয়েন্সদের ইনফ্লুয়েন্স করতে পারবেন তা পারচেজ করার জন্য। এই সুবিধাটি আপনি কিন্তু টেক্সট কিংবা ইমেজ কনটেন্ট পোস্ট করার ক্ষেত্রে পাবেন না। 

ইউটিউব মার্কেটিংয়ের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সুবিধাজনক দিক হচ্ছে এই মার্কেটিং চাইলে অর্গানিক এবং পেইড দুই ভাবেই করা যায়। যদি আপনার ভিডিওর কোয়ালিটি ও কনটেন্ট ভালো হয়, তাহলে অল্প সময়েই অনেক অর্গানিক সাবস্ক্রাইবার পেতে পারেন, যাদের মাধ্যমে আপনার ব্যবসার সেল কিংবা প্রতিষ্ঠানের প্রচারণা দুটোই বাড়তে পারে। এ কারণে যাদের নতুন কোম্পানি কিংবা ছোট পরিসরে যারা ব্যবসা করতে শুরু করেছেন, তাদের জন্য মার্কেটিং প্রসেস হিসেবে ইউটিউব একদম পারফেক্ট। 

আবার যদি ব্যবসার সেল আরেকটু বুষ্ট আপ করতে চান, সেক্ষেত্রে ইউটিউবে অর্গানিক মার্কেটিং করার পাশাপাশি ইউটিউব অ্যাডসের সাহায্যে পেইড মার্কেটিংও করতে পারবেন। বর্তমানে ইউটিউব অ্যাডসের সাহায্যে অনেক ব্যবসায়ী নিজেদের বিজনেসে সেল বাড়াতে সক্ষম হচ্ছেন। 

ইউটিউব মার্কেটিং কিভাবে করবেন? 

আমি জানি এখন আপনারা অনেকেই জানতে চাইবেন ইউটিউব মার্কেটিং কিভাবে করতে হয় সে সম্পর্কে। তাহলে চলুন আর দেরি না করে জেনে নেয়া যাক ইউটিউব মার্কেটিং করার উপায় সম্পর্কে। 

১। ইউটিউব মার্কেটিং করার জন্য আপনাদের শুরুতেই প্রয়োজন হবে একটি ইউটিউব চ্যানেল। ইউটিউব চ্যানেল ওপেন করা খুবই সহজ। www.youtube.com এ গিয়ে নিজের ইমেইল অ্যাড্রেসের মাধ্যমে প্রথমেই একটি ইউটিউব চ্যানেল ওপেন করে নিন। যদি আপনার জিমেইল অ্যাকাউন্ট থাকে, তাহলে আপনি সম্পূর্ণ বিনামূল্যেই ইউটিউব চ্যানেল ওপেন করতে পারবেন। 

২। ইউটিউব চ্যানেল ওপেন করার পর আপনাকে চ্যানেলটি সেটআপ করতে হবে। এ সময় আপনাকে চ্যানেলের নাম, চ্যানেলের প্রোফাইল পিকচার এবং চ্যানেলের ডেসক্রিপশন এ তিনটি আপলোড করতে হবে। যদি আপনি আপনার বিজনেসের জন্য ইউটিউব মার্কেটিং করতে চান, সেক্ষেত্রে আপনার বিজনেসের নামেই চ্যানেলের নামকরণ করতে হবে। আবার যদি কোম্পানির প্রমোশন করতে চান, সে ক্ষেত্রে চ্যানেলের নামটি হবে আপনার কোম্পানির নাম। 

এরপর প্রোফাইল পিকচার হিসেবে আপনার বিজনেস কিংবা কোম্পানির লোগো ব্যবহার করতে হবে। তারপর চ্যানেলের ডেসক্রিপশন হিসেবে আপনার বিজনেস কিংবা কোম্পানি সম্পর্কে ছোট করে গোছানো ভাষায় কিছু তথ্য তুলে ধরতে হবে। 

সব সময় মনে রাখবেন ,চ্যানেলের ডেসক্রিপশন পড়ার মাধ্যমেই একজন মানুষ প্রাথমিকভাবে আপনার চ্যানেলটি সম্পর্কে ধারণা নেবে। তাই চ্যানেলের ডেসক্রিপশন লেখার সময় খুব কঠিন ভাষা ব্যবহার না করাই ভালো। বরং টার্গেট অডিয়েন্সকে আকর্ষণ করার জন্য সহজ কিন্তু আকর্ষণীয় ভাষায় ডেসক্রিপশন লেখার চেষ্টা করুন। 

৩। এরপরেই ইউটিউব মার্কেটিং করার মূল কাজটি শুরু করতে হবে, যেটি হল নিয়মিত ভিডিও আপলোড করা। এক্ষেত্রে আপনারা দুই ভাবে ভিডিও তৈরি করে সেটি আপলোড করতে পারেন। 

প্রথম উপায়টি হচ্ছে আপনার বিজনেসের পণ্যসহ আপনি নিজে ক্যামেরার সামনে এসে কথা বলবেন এবং সেই ভিডিও ক্লিপটি যথাযথভাবে এডিট করার পর চ্যানেলে পোস্ট করবেন। যদি আপনি নিজে ক্যামেরার সামনে থেকে কথা বলেন, তাহলে আপনার শব্দগুলোর উচ্চারণ যেন সঠিক হয় এবং আপনার কথা বলার টোন যেন আকর্ষণীয় হয়, এ দুটো বিষয় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। 

শুধুমাত্র বিজনেস নয়, আপনি চাইলে নিজের কোম্পানির প্রমোশনও এভাবে করতে পারেন। আবার যদি আপনার সুযোগ ও সামর্থ্য থাকে, সেক্ষেত্রে ইউটিউব মার্কেটিং করার জন্য সুন্দর ভাবে যেকোন তথ্য উপস্থাপনা করতে পারে এমন কোনো মানুষকেও হায়ার করতে পারেন। 

ইউটিউব মার্কেটিং করার জন্য ভিডিও তৈরি করার দ্বিতীয় উপায়টি হচ্ছে কোন পণ্যের কতগুলো ছবি তুলে সেগুলো পাওয়ারপয়েন্ট স্লাইডে বসিয়ে ব্যাকগ্রাউন্ডে নিজের ভয়েস দিয়ে স্ক্রীন রেকর্ড করা। এছাড়াও চাইলে কিছু সময় ধরে কোন পণ্যের ভিডিও করে তারপর ভয়েস ওভার করেও ভিডিও তৈরি করতে পারেন। এতে করে আপনাকে ক্যামেরার সামনে আসতে হবেনা। 

আপনি ইউটিউব মার্কেটিং করার জন্য যেভাবেই ভিডিও তৈরি করুন না কেন, ভিডিওর এডিট যেন সুন্দর হয় এবং ভিডিওর কোয়ালিটি যেন ভালো হয় এ দুটো বিষয় অবশ্যই লক্ষ্য রাখুন। কারণ কনটেন্টের কোয়ালিটি ভাল না হলে কখনোই আপনার ভিডিও মানুষ দেখবে না। তাই ভিডিওর কোয়ালিটি নিয়ে কোনভাবেই কমপ্রোমাইজ করা যাবেনা। 

সেই সাথে সবসময় চেষ্টা করবেন নিয়মিতভাবে ভিডিও আপলোড করার। প্রথম ১/২ সপ্তাহের প্রতিদিন ভিডিও আপলোড করে তারপরের একমাস ভিডিও আপলোড করলেন না- এমন কাজ করা থেকে বিরত থাকুন। যদি নিয়মিতভাবে চ্যানেলে ভিডিও আপলোড করেন, তাহলে খুব দ্রুতই আপনার চ্যানেল গ্রো করবে। 

৪। ইউটিউব মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে ভাল আউটপুট পেতে চাইলে ভিডিওগুলোকে এসইও অপটিমাইজড করতে ভুলবেন না। এক্ষেত্রে যে কি- ওয়ার্ডের মাধ্যমে মানুষ ইউটিউবে বেশি সার্চ করে, সে কিওয়ার্ডগুলোই আপনার ভিডিওর ডেস্ক্রিপশন ও টাইটেলে রাখার চেষ্টা করুন। এতে করে আপনার আপলোড করা ভিডিও বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে পৌছাবে।  

৫। ইউটিউব মার্কেটিং করার সর্বশেষ ধাপটি হচ্ছে ইউটিউব অ্যাডসের সাহায্য নেওয়া। ইউটিউব অ্যাডস হচ্ছে আপনারা ইউটিউবে কোন ভিডিও দেখার সময় যে অ্যাডস বা বিজ্ঞাপনগুলো স্ক্রিনে দেখতে পান সেগুলো। শুধুমাত্র ভিডিও দেখার সময়ই নয়, এই অ্যাডসগুলো ইউটিউবে কোন ভিডিও দেখতে সার্চ করলেও দেখা যায়। মূলত ইউটিউব অ্যাডসের মাধ্যমেই টার্গেটেড অডিয়েন্সের কাছে আপনার ভিডিও পৌঁছানো হয়। এই অ্যাড ক্যাম্পেইনগুলো রান করানোর জন্য আপনাকে কিছু টাকা খরচ করতে হবে। যদি ইউটিউবে ক্যাম্পেইনে সঠিকভাবে অডিয়েন্স টার্গেটিং করতে পারেন, তাহলে খুব দ্রুতই ভিডিওতে ভিউ বাড়ানো সম্ভব হয়। 

এছাড়াও ইউটিউব মার্কেটিং করার উপায় হিসেবে সবার প্রতি পরামর্শ থাকবে ইউটিউব চ্যানেলে যে ভিডিওগুলো আপলোড করবেন, সেগুলো নিজেদের সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করতে ভুলবেন না। 

ইউটিউব মার্কেটিং

ইউটিউব মার্কেটিং করার মাধ্যমে আয় হয় কিভাবে? 

এখন আমি আপনাদেরকে জানাবো ইউটিউব মার্কেটিং করে কিভাবে আপনারা বাড়িতে বসেই ভাল অঙ্কের টাকা আয় করতে পারেন সে সম্পর্কে –

  • ইউটিউব মার্কেটিং করে নিজের বিজনেসের পণ্য কিংবা সার্ভিস সম্পর্কে পটেনশিয়াল কাস্টমারদের জানিয়ে বিজনেসের সেল বাড়ানোর মাধ্যমে আয় করা যায়। 
  • বর্তমানে ইউটিউবের কিছু শর্ত পূরণ করলে আপনারা আপনাদের ইউটিউব চ্যানেল মনেটাইজড করতে পারবেন। তখন গুগলের অ্যাডসেন্সের মাধ্যমে খুব সহজেই প্রতিটি ভিডিও থেকে আয় করতে পারবেন। 
  • যদি আপনাদের চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা অনেক বেশি থাকে, তখন অনেক কোম্পানি আপনাদের চ্যানেলের ভিডিওতে নিজেদের জন্য বিজ্ঞাপন দিতে চাইবে। সেই বিজ্ঞাপন থেকেও আয় করতে পারবেন। একইসাথে যদি সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা বাড়াতে পারেন, তখন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে বা কোলাবোরেশান করার মাধ্যমেও আয় করতে পারবেন।  

সুতরাং বুঝতেই পারছেন ইউটিউব মার্কেটিং করলে আয় করার বিভিন্ন ইফেকটিভ উপায় রয়েছে। ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের অন্যান্য সেক্টরগুলোর তুলনায় এই সেক্টরে এখনো প্রতিযোগিতা বেশ কমই বলা চলে। তাই চাইলে এই সুযোগকে কাজে লাগাতে পারেন চোখ বন্ধ করে। 

ইউটিউব মার্কেটিং করে সফল হওয়ার কিছু টিপস 

ইউটিউব মার্কেটিং অনেকে করলেও সবাই কিন্তু সফল হতে পারেন না। অনেকে অভিযোগ করেন সাবস্ক্রাইবার বাড়ছে না, ভিডিওর রিচ বাড়ছে না আবার বিজনেসের সেলও বাড়ছে না। এমন যেন না হয়, তা নিশ্চিত করতে সবার জন্য জানাচ্ছি ইউটিউব মার্কেটিং করে সফল হওয়ার কিছু টিপস সম্পর্কে। 

  • যখন আপনারা চ্যানেলের জন্য ভিডিও বানাবেন, তখন ভিডিওর ব্যাকগ্রাউন্ড যেন নোংরা না হয় তা নিশ্চিত করুন। সবচেয়ে ভালো হয় যদি একরঙা ব্যাকগ্রাউন্ড রাখতে পারেন। চাইলে ব্যাকগ্রাউন্ড আরো সুন্দর করে তুলতে ফুলদানি, ফটো ফ্রেম, দু-একটি শোপিস ইত্যাদি রাখতে পারেন। 
  • যদি শুরুতেই ভিডিও তৈরি করার জন্য আপনার ক্যামেরা কেনার বাজেট না থাকে, তাহলে হতাশ হবেন না। মোটামুটি ভালো রেজ্যুলুশনের একটি ফোন দিয়ে ভিডিও তৈরি করা শুরু করুন। তারপর যখন ইনকাম বাড়বে তখন একটি ক্যামেরা তে ইনভেস্ট করুন। 
  • শুরুর দিকে আপনার চ্যানেলের ভিডিওগুলোর দৈর্ঘ্য যতটুকু সম্ভব ছোট রাখার চেষ্টা করুন। কারণ বেশিরভাগ মানুষেরই বড় ভিডিও গুলো দেখার ধৈর্য থাকে না। যখন আপনার চ্যানেলে অর্গানিক সাবস্ক্রাইবার বাড়বে, তখন আস্তে আস্তে ভিডিওর দৈর্ঘ্য বাড়াতে পারেন। 
  • ভিডিও তৈরি করার সময় ব্যাকগ্রাউন্ড নয়েজ এড়াতে একটি মাইক্রোফোন অবশ্যই ব্যবহার করুন। মাইক্রোফোন ব্যবহার করলে ভিডিওর সাউন্ড কোয়ালিটি অনেক ভালো আসে। 
  • যখন ভিডিও তৈরি করবেন, তখন আশেপাশে যেন আওয়াজ না থাকে তা অবশ্যই খেয়াল রাখবেন। বিশেষ করে আপনার যদি কোলাহলপূর্ণ এলাকাতে বাড়ি হয়ে থাকে, তাহলে ভিডিও তৈরি করার জন্য গভীর রাত কিংবা ভোরের সময়টুকু বেছে নিন। 
  • সুন্দরভাবে ভিডিও এডিট করার জন্য কিছু ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার কিভাবে অপারেট করতে হয় তা শিখে রাখুন। মনে রাখবেন, আপনি যত সুন্দর ভাবে ভিডিও এডিট করবেন, আপনার ভিডিও ততবেশি আকর্ষণীয় হবে। 
  • ইউটিউব মার্কেটিং সফল করার জন্য ভিডিওর টাইটেল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই অবশ্যই প্রতিটি ভিডিও টাইটেল যথাযথভাবে চিন্তা করার পর দেবেন। এমনভাবে টাইটেল লিখবেন, যাতে করে টাইটেল দেখামাত্রই টার্গেট অডিয়েন্সের ভিডিওটি পুরোটুকু দেখার ইচ্ছে হয়। 

 

শেষ কথা 

এটুকুই ছিল ইউটিউব মার্কেটিং কি, ইউটিউব মার্কেটিং কেন করবেন, ইউটিউব মার্কেটিং কিভাবে করতে হয় এবং কিভাবে এই মার্কেটিং করার মাধ্যমে আয় করতে পারবেন ইত্যাদি সম্পর্কিত বিস্তারিত আলোচনা। আশা করি ইউটিউব মার্কেটিং নিয়ে আপনাদের মনে যা প্রশ্ন ছিল সেগুলোর উত্তর দিতে পেরেছি। সবার প্রতি পরামর্শ থাকবে নিজের কোম্পানীর প্রচারনা চালাতে কিংবা ব্যবসার সেল বাড়াতে একবার হলেও ইউটিউব মার্কেটিং করে দেখুন। আশা করি অবশ্যই ভাল আউটপুট পাবেন। 

আর্টিকেলটি ভালো লাগলে ঘুরে আসুন আমাদের ফেসবুক পেইজ থেকে!

 

Leave a Comment