দৈনিক আমরা রাস্তাঘাটে চলতে ফিরতে বিভিন্ন ধরনের ব্যানার, পোস্টার, বিলবোর্ডের দেখা পাই। আবার ফেসবুক বা ইন্সটাগ্রামের মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া কভার ফটো এবং কমার্শিয়াল এডভারটাইসমেন্টের মাধ্যমে আকর্ষিত হয়ে থাকি। কখনো কি ভেবে দেখেছি এই কাজগুলো কিভাবে করা হয়ে থাকে? আবার অনেকেরই ইচ্ছা হয়ে থাকে, ইশ! যদি এভাবে নিজেও পোস্টার বা ব্যানার বানানোর চেষ্টা করে দেখতাম!
এ ধরনের কাজগুলোকে বলা হয় গ্রাফিক ডিজাইন আর যারা এধরনের কাজগুলো করে থাকে তাদেরকে বলা হয়ে থাকে গ্রাফিক ডিজাইনার। বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিং এর যুগে গ্রাফিক ডিজাইন একটি অপরিহার্য অংশ। কারণ ডিজিটাল মার্কেটিং করতে গেলে একটি কোম্পানি, অরগানাইজেশন বা ইনস্টিটিউশনের যা যা দরকার তা বেশিরভাগই আসে গ্রাফিক ডিজাইন হতে।
প্রতিটি গ্রাফিক ডিজাইন কন্টেন্ট তৈরি করা হয় থেকে বেশকিছু সফটওয়্যার এর মাধ্যমে। সফটওয়ারগুলো দিয়ে আপনি যেভাবে চান ঠিক সেভাবেই আপনার চাহিদা অনুসারে ডিজাইন করে নিতে পারবেন। সফটওয়্যার গুলোর মধ্যে কিছু রয়েছে যা আপনাকে টাকা দিয়ে কিনতে হবে। আবার কিছু সফটওয়্যার আছে যেগুলো আপনি চাইলেই ফ্রিতে ডাউনলোড করে ব্যবহার করতে পারবেন। আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা বেশ কিছু গ্রাফিক ডিজাইন সফটওয়্যার সম্পর্কে জানবো এবং গ্রাফিক ডিজাইন সফটওয়্যারগুলো কি কি ধরনের কাজ করে থাকে তার একটি পরিপূর্ণ ধারণা পাবো। তার পূর্বে জেনে আমরা জেনে নেবো গ্রাফিক ডিজাইন কি এবং এর প্রকারভেদ সম্পর্কে।
গ্রাফিক ডিজাইনিং কি?
গ্রাফিক্স ডিজাইন হচ্ছে কোন একটি কনটেন্ট বা তথ্যকে সৃজনশীলতা দিয়ে রং ,রেখা ও বিভিন্ন শিল্পের মাধ্যমে মানুষের কাছে তুলে ধরা । এটি কমিউনিকেশন ডিজাইন নামেও পরিচিত। বিভিন্ন গ্রাফিক ডিজাইন সফটওয়্যার এর মাধ্যমে আমাদের চারপাশে বা কল্পনায় থাকা বিষয়বস্তু এবং ধারণা গুলোকে জীবন্ত পাঠ্য এবং চিত্র গুলির মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছে উপস্থাপন করা হয়ে থাকে। এছাড়া নানা ধরনের কমার্শিয়াল বা নন কমার্শিয়াল কোম্পানি এবং অরগানাইজেশনগুলো গ্রাহকদের সাথে গ্রাফিক কন্টেন্টের মাধ্যমে সব থেকে বেশি কমিউনিকেশন করে থাকে। পাশাপাশি ডিজাইনকৃত পণ্যের প্রচার এবং বিক্রয় অথবা বার্তা প্রদান বা যে কোন ব্র্যান্ডের পরিচয় প্রকাশে গ্রাফিক ডিজাইনের মাধ্যমে করা হয়।
গ্রাফিক্স ডিজাইন এর বিভিন্ন প্রকার
কাজের ধরন অনুযায়ী গ্রাফিক ডিজাইন কে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা যায়।
- মোশন গ্রাফিক্স
- স্টিল ইমেজ গ্রাফিক্স
স্টিল ইমেজ গ্রাফিক্সকে আবার তিন ভাগে ভাগ করা যায়।
- রাস্টার ইমেইজ
- ভেক্টর ইমেজ
- টাইপোগ্রাফি
অন্যদিকে মোশন গ্রাফিক্স কে দুই ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে
- অ্যানিমেশন গ্রাফিক্স এবং
- ভিডিও গ্রাফিক্স
প্রকারভেদ গুলো জানার পর অবশ্যই আপনার মাথায় ঘুরছে গ্রাফিক ডিজাইন সফটওয়্যার দিয়ে কি কি ধরনের কাজ করা যেতে পারে। এখন আমরা জানবো কি কি ধরনের কাজে গ্রাফিক ডিজাইন প্রয়োজন হয়।
কি কি কাজে গ্রাফিক্স ডিজাইন প্রয়োজন
কাজের ধরন, উদ্দেশ্য এবং বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের গ্রাফিক ডিজাইন করা হয়ে থাকে যেমন:
- আপনি যদি কোন ব্র্যান্ড বা অরগানাইজেশন বা ইনস্টিটিউশনের পরিচিতি প্রকাশ করতে চান তাহলে অবশ্যই সেটি একটি লোগোর মাধ্যমে করতে হবে। যেমন আমরা ফেসবুক বা গুগল ইত্যাদি নানা প্রতিষ্ঠানের পরিচিতি তাদের লোগোর মাধ্যমে পেয়ে থাকি। এছাড়া ব্র্যান্ড ভ্যালু এড করার জন্যও লোগো ডিজাইন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হিসেবে বিবেচিত।
- কমার্শিয়াল সেক্টর গুলোতে সবথেকে বেশি যে জিনিসটি প্রয়োজন হয়ে থাকে সেটি হলো প্রোডাক্ট ডিজাইন। সেই প্রোডাক্টটি দেখতে কেমন হবে ,কোন আকারের হবে এবং সেটির প্রিন্ট এর কালার কি রকম হবে, এসব কিছু গ্রাফিক ডিজাইনের মাধ্যমে করা হয়ে থাকে।
- বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিং এর যুগে প্রোডাক্টের ব্র্যান্ডিং মাধ্যমে সে প্রোডাক্টের প্রমোটিং ট্যাগলাইন বার্তা গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয় গ্রাফিক ডিজাইনের মাধ্যমে।
- বিভিন্ন তথ্য বা রেজিস্ট্রেশন এর জন্য আমরা যেসব ওয়েবসাইটে ভিজিট করে থাকি সেটির ডিজাইন লে-আউট গ্রাফিক ডিজাইনের মাধ্যমে করা হয়ে থাকে।
- বিভিন্ন ব্যানার পোস্টার টি-শার্ট, বই ইত্যাদি প্রিন্টিং এর জন্য গ্রাফিক ডিজাইন ছাড়া সম্ভব নয়।
- সোনামণিদের বাল্যকাল কে বিনোদনপূর্ণ রাখতে বিভিন্ন ধরনের অ্যানিমেটেড কন্টেন্ট তৈরি করা হয় যা গ্রাফিক ডিজাইন ছাড়া সম্ভব না।
সুতরাং আমরা বুঝতেই পারছি গ্রাফিক ডিজাইন এর মাধ্যমে কত ধরনের কাজ করা সম্ভব এবং এর গুরুত্ব কতটুকু। এ পর্যন্ত আমরা দেখেছি গ্রাফিক ডিজাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন গ্রাফিকের কাজের ধরণ যা কিনা বিভিন্ন গ্রাফিক ডিজাইন সফটওয়্যারের মাধ্যমে করা হয়ে থাকে। গ্রাফিক ডিজাইন সফটওয়্যার এর কাজ করতে পারা এক ধরনের বিশেষ স্কিল যেটি দীর্ঘ অনুশীলন এবং সৃজনশীল চিন্তাধারার মাধ্যমে অর্জন করতে হয়। এখন আমরা জানবো জনপ্রিয় কিছু গ্রাফিক ডিজাইন সফটওয়্যার সম্পর্কে।
গ্রাফিক ডিজাইন করার জন্য প্রয়োজনীয় কিছু সফটওয়্যার
- অ্যাডোবি ফটোশপ- Adobe Photoshop
অ্যাডোবি ফটোশপের কাজ মূলত ফটো এডিটিং এর মাধ্যমে ছবিকে ভালোভাবে ফুটিয়ে তোলা। আপনি যদি ছবি রিলেটেড কোনো ডিজাইন করতে চান যেমন ব্রাইটনেস বা কনট্রাস্ট এডজাস্ট করা, রিসাইজ করা,ব্যাকগ্রাউন্ড রিমুভ সহ নানা ধরনের কাজগুলো প্রফেশনালি করতে চাইলে এডোবি ফটোশপের মাধ্যমে করতে হবে।
এই সফটওয়্যারটির দুইটি ভার্সন রয়েছে যেটি দিয়ে আপনি ফোনে এবং আপনার কম্পিউটারে কাজ করতে পারবেন। যেকোনো ধরনের ছবিতে আপনি যে যে পরিবর্তন আনতে চান সবকিছুই এই সফটওয়্যারটির মাধ্যমে খুব সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারবেন।
- অ্যাডোবি ইলাস্ট্রেটর- Adobe Illustrator
অ্যাডোবি ইলাস্ট্রেটরে ফটোশপের সিস্টার প্রোগ্রাম বলা হয়ে থাকে কারণ দুইটি সফটওয়্যার অনেক কিছু মিল বহন করে থাকে যার মাধ্যমে এমন অনেক কাজ আছে আপনি চাইলে উভয় সফট্ওয়ারে সাহায্য করতে পারবেন। তবে একটি বিশেষ পার্থক্য হচ্ছে ফটোশপে আপনি সাধারণত ফটো এডিটিং এর জন্য বেশি সুবিধা পেয়ে থাকবেন।
অন্যদিকে অ্যাডোবি ইলাস্ট্রেটরে বিভিন্ন ধরনের ভেক্টর এবং থ্রি ডাইমেনশনাল ইমেজ তৈরীর ক্ষেত্রে সুবিধা পাবেন। এই সফটওয়ারের আরেকটি বিশেষত্ব হচ্ছে কোয়ালিটি এবং রেজুলেশন ঠিক রেখে যেকোনো ধরনের ডিজাইন আপনি তৈরি করতে পারবেন। বিভিন্ন ধরনের কোম্পানির অরগানাইজেশনের আমরা ব্র্যান্ড ভেলু এড করার জন্য যে লোগো তৈরি করে থাকি সেটি এডোব ইলাস্ট্রেটরের মাধ্যমে তৈরি করা হয়ে থাকে।
- অ্যাডোবি ইন-ডিজাইন- Adobe In-design
অ্যাডোবি ফটোশপ এবং ইলাস্ট্রেটর এর মতোই আরেকটি সফটওয়্যার হচ্ছে অ্যাডোবি ইন ডিজাইন। এই সফটওয়্যারটির মাধ্যমে পোস্টকার্ড, বুক কভার্ম্যাগাজিন এবং নিউজলেটার ডিজাইন করা হয়ে থাকে। সফটওয়্যারটিতে কাজ করার আগে অবশ্যই আপনাকে এডোবি ফটোশপ এবং ইলাস্ট্রেটর এ পাকাপোক্ত দক্ষতা অর্জন করে নিতে হবে।
- অ্যাডোবি ড্রিম ওয়েভার- Adobe Dreamweaver
ডিজাইন দুনিয়ার একটি মাস্টারপিস সফটওয়্যার হচ্ছে অ্যাডবি ড্রিমওয়েভার। এটির মাধ্যমে আপনি যেকোনো ওয়েব কন্টেন্ট ডিজাইন করতে পারবেন।যারা ওয়েবসাইট ডিজাইন করে থাকেন তারা মাত্র কয়েকটি লাইনের কোড লিখেই ওয়েব ডিজাইন বা ওয়েব কন্টেন্ট গুলোকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে পারেন । বর্তমানে এই সফটওয়্যারটির কাজ জানা লোকদের চাহিদা অনেক বেশি।
- পাওয়ার পয়েন্ট- MS Power Point
মাইক্রোসফট পাওয়ার পয়েন্ট মূলত গ্রাফিক্স ডিজাইন সেক্টরে অধীনে একটি সফটওয়্যার । যেকোনো গ্রাফিক্স ডিজাইনারের মাইক্রোসফট পাওয়ারপয়েন্ট এর কাজ জানা অত্যাবশ্যকীয় একটি বিষয়। ডিজাইনের প্রতিটি কাজই এখানে সহজ উপায়ে করা হয়ে থাকে।
এটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে প্রেজেন্টেশন স্লাইড বানানোর জন্য যেখানে বিভিন্ন ধরনের তথ্য ও ছবি, অডিও, ভিডিও সহ বিভিন্ন ইনফোগ্রাফিক এলিমেন্টসের মাধ্যমে তথ্য প্রকাশ করার জন্য । প্রফেশনাল লাইফে সবারই এই সফটওয়্যারটির বেসিক কিছু কাজ জেনে রাখা দরকার।এতে কোন বিষয়বস্তুকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করার কাজটি আপনার জন্য আরও সহজতর হয়ে যাবে।
- কোরেল ড্র- CorelDRAW
কোরেল ড্র এমন একটি সফটওয়্যার যেটির মাধ্যমে আপনি ওয়েব ডিজাইন এবং গ্রাফিক্স এডিটিং জিনিসটাকে একসাথে কাজে লাগিয়ে যেকোনো ধরনের কাজ করতে পারবেন।
গ্রাফিক ডিজাইনাররা একসাথে দুইটি সুবিধা পাওয়ার জন্য এই সফটওয়্যারটি বেশি ব্যবহার করে থাকেন। ড্রিমওয়েভার এবং ইলাস্ট্রেটর ইন-ডিজাইনের মত সফটওয়্যার গুলোর যৌথ সুবিধাও রয়েছে যার মাধ্যমে আপনি খুব সূক্ষ্মভাবে বিভিন্ন ডিজাইন করতে পারবেন।
- ইঙ্কস্কেপ- Inkscape
ইঙ্কস্কেপ কিছুটা ট্রান্সলেশন সফটওয়্যার এর মতই কাজ করে থাকে। গ্রাফিক ডিজাইন লোগো তৈরিতে বেস্ট ক্যারিয়ার গড়তে চান তাহলে এই সফটওয়্যারটির সাহায্যে শুরু করতে পারেন। আপনাদের মধ্যে যদি কেউ এডোবি ইলাস্ট্রেটর কে বেশি কঠিন মনে হয়ে যায় তাহলে আপনি এই সফটওয়্যারটির মাধ্যমে খুব সহজেই লোগো ডিজাইন করে নিতে পারবেন। এটিতে যে ফিচারস এবং সুবিধা গুলো রয়েছে সেটিকে আপনার সৃজনশীলতা কাজে লাগিয়ে অনেক সুন্দর সুন্দর আউটপুট বের করে নিয়ে আসতে সক্ষম হবেন।
- ব্লেন্ডার- Blender
থ্রিডি গ্রাফিক্স ডিজাইন সফটওয়্যার গুলোর মধ্যে ব্লেন্ডার অন্যতম। এটির মাধ্যমে যেকোনো ধরনের ভিজুয়াল ইফেক্ট, থ্রিডি মডেল এবং ইন্টারেক্টিভ থ্রিডি এনিমেশন তৈরি করা হয়ে থাকে।পাশাপাশি এর কিছু বিশেষ সুবিধা রয়েছে যেমন এটির মাধ্যমে আপনি সহজেই থ্রিডি মডেলিং করতে পারবেন যেখানে ভিজুয়াল ইফেক্ট এর মাধ্যমে ডিজাইঙ্কে জীবন্ত করে তোলা হবে।
এরপর স্কিন মডিফায়ার সুবিধার মাধ্যমে আপনি বিভিন্ন ধরনের ব্যাকগ্রাউন্ড চাহিদা অনুযায়ী মডিফাই করতে পারবেন। এছাড়া স্কাউটিং ও এনিমেশন ক্যামেরা ও অবজেক্ট ট্রাকিং মোশন সুবিধার মাধ্যমে যেকোনো ধরনের থ্রিডি ডিজাইন অনায়াসে করতে পারবেন।
এতক্ষণ পর্যন্ত আমরা গ্রাফিক ডিজাইন করার বিভিন্ন প্রফেশনাল সফটওয়্যার সম্বন্ধে ধারণা নিলাম। প্রতিটি সফটওয়্যার কাজ করতে গেলে অবশ্যই সফটওয়্যারটির সম্বন্ধে খুঁটিনাটি বিভিন্ন কাজ আগে শিখে নিতে হবে। নিয়মিত কাজের মাধ্যমে সফটওয়্যার গুলোতে স্কিল ডেভেলপ করে নতুন নরনের নান্দনিক ডিজাইন ভিজুয়ালাইজ করা সম্ভব হয়ে উঠবে।
তবে এখন এমন কিছু সফটওয়্যারের কথা জানবো যেগুলো মূলত নতুনদের জন্য। অর্থাৎ যারা গ্রাফিক ডিজাইন সেক্টরে নতুন, পূর্বে কোন কাজের এক্সপিরিয়েন্স নেই এবং এডোবি ফটোশপ ,ইলাস্ট্রেটর এবং ব্লেন্ডারের মত সফটওয়ারগুলো যাদের কাছে কঠিন লাগে তাদের জন্য এমন কিছু সফটওয়্যার রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে সহজেই তারা তাদের চিন্তা শক্তি এবং সৃজনশীল দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে সহজেই গ্রাফিক ডিজাইন করতে পারবেন। সফটওয়্যার গুলোতে বিভিন্ন রেডিমেড টেমপ্লেট এবং ডিজাইন রিলেটেড বিভিন্ন ইলিমেন্ট পাওয়া যায়। এগুলি গ্রাফিক ডিজাইনে নতুনদের ডিজাইন করতে সাহায্য করে থাকে। জেনে নেওয়া যাক সেই সফটওয়্যার গুলো সম্বন্ধে।
যারা গ্রাফিক ডিজাইনে নতুন বা প্রফেশনালি জানেন না তাদের জন্য কয়েকটি ওয়েবসাইট
- ক্যানভা
এটি বর্তমানে বিশ্বের সবথেকে বেশি জনপ্রিয় একটি গ্রাফিক ডিজাইন ওয়েবসাইট। ডিজাইন রিলেটেড যেকোনো ধরনের কাজ আপনি এখানে অফলাইন ও অনলাইন দুইভাবেই করতে পারবেন। কাজের ধরন অনুযায়ী এখানে বেশ কিছু রেডিমেড টেমপ্লেট পাবেন। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের গ্রাফিক এলিমেন্টস পাবেন যেগুলো আপনার ডিজাইন কে আরো সৌন্দর্যবর্ধন করতে সাহায্য করবে। এর বেশ কিছু ফিচারস আছে যার মাধ্যমে অনেক প্রফেশনাল কাজকর্ম করা সম্ভব।এর ফিচারস এবং কাজের ধরন গুলো এত সুন্দর এবং সহজভাবে গোছানো যেকোনো ধরনের কাজ কোনো বিগিনার সহজে বুঝতে পারবে এবং খুব দ্রুত সময়ে কাজ করে দিতে পারবে।
- গ্র্যাভিট ডিজাইন
গ্র্যাভিট ডিজাইন সফটওয়্যার জগতের বেস্ট ফ্রি গ্রাফিক ডিজাইন সফটওয়্যার ফর বেগিনার্স বলে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। যারা নতুন কাজ করতে শুরু করেছেন তারা সুবিধার কথা চিন্তা মাথায় রেখে বিভিন্ন ধরনের ফিচারস সফটওয়্যারটিতে পাবেন যেখানে সহজেই যেকোনো ধরনের ডিজাইন নানা ফরমেটে তারা এক্সপোর্ট করতে পারবেন। এছাড়া এটিকে অনলাইন এবং ডেস্কটপ দুইটি ভার্সনে ইউজ করার সুবিধা পাবেন।
- ইজিলি
এটি মূলত একটি ইনফোগ্রাফিক মেকার যেখানে আপনারা বিভিন্ন ধরনের প্রেজেন্টেশন তৈরী করতে পারবেন। বিভিন্ন ধরনের ব্লগার এবং অনলাইন কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের কথা মাথায় রেখে এই সফটওয়্যারটি তৈরি করা হয়েছে যেখানে তাদের চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের গ্রাফিক কনটেন্ট থেকে তৈরি করে নিতে পারেন। এ সফটওয়্যার এর একটি বিশেষত্ব হচ্ছে যে এখানে ইনফোগ্রাফিক তৈরির সময় আপনারা প্রচুর পরিমাণে মুভিং পিপল, ভেরিয়াস লাই্ ডায়াগ্রাম আইকন পাবেন। এগুলোকে বিভিন্ন ফরম্যাটে ডিসপ্লে করে আপনি প্রয়োজনীয় বার্তা সহজে তুলে ধরতে পারবেন। এই সফটওয়্যারটি বেসিক ভার্সন ফ্রীতে পাওয়া গেলেও কিছু প্রিমিয়াম ফিচারস এবং এলিমেন্টস আছে যেগুলো জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি প্রদান করতে হয়।
- পিএক্সএলআর
পিএক্সএলআর হলো এমন একটি জনপ্রিয় ইমেজ এডিটিং টুল যার মাধ্যমে অনলাইন গ্রাফিক ডিজাইন করা হয়ে থাকে। এই সফটওয়্যারটির বেশিরভাগ টু্ল ফ্রিতে ব্যবহার করা সুবিধা রয়েছে।বিভিন্ন ধরনের গ্রাফিকাল কন্টেন্ট তৈরি করতে এটির ফিচারস গুলো বেশ ভালোভাবে কার্যকারী।
- ডিজাইন উইজার্ড
ডিজাইন উইজার্ড অসাধারণ একটি গ্রাফিক ডিজাইন টুল যেটি বর্তমানে প্রচুর পরিমাণে বিগিনার ব্যবহার করে থাকেন। বিভিন্ন ধরনের রেডিমেড টেমপ্লেট দেওয়া থাকে যেটিকে মডিফাই করে আপনি বিভিন্ন ধরনের সুন্দর সুন্দর কন্টেন্ট তৈরি করতে পারবেন। ব্ল্যাংক ক্যানভাস গুলোতেও আপনি অনেক নিজের মত করে সৃজনশীল দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন ডিজাইন সম্পন্ন করতে পারেন।
পরিশেষে বর্তমানে প্রতিটি মানুষ একটি মুক্ত কর্মক্ষেত্র গড়ে তোলার চিন্তাভাবনা করছেন যেখানে তিনি তার সৃজনশীল দক্ষতা ইচ্ছাশক্তির বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে পারবেন। এটিকে মাথায় রেখেই বর্তমানে বিভিন্ন মানুষ গ্রাফিক ডিজাইন শিখতে আগ্রহী হচ্ছেন। গোটা বিশ্ব জুড়ে এর বিশাল কাজের ক্ষেত্র থাকায় সহজেই কাজ পাওয়া সম্ভব হয়ে থাকে।
আপনি যদি গ্রাফিক ডিজাইন সেক্টরে নিজেকে দক্ষ করে তুলতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে এই সফটওয়্যার গুলোর সঠিক ধারণা নিয়ে কাজ শিখতে হবে। আজকের আলোচনা থেকে আমরা সবাই বুঝতে পেরেছি যেকোনো সফটওয়্যার এর মাধ্যমে কি ধরনের গ্রাফিক ডিজাইন করা সম্ভব হয়ে থাকে। আপনি যদি ভেবে থাকেন একজন দক্ষ গ্রাফিক ডিজাইনার হবেন এবং ভালো অর্থ উপার্জন করবেন তাহলে আজই আপনার পছন্দের সফটওয়্যারটি ডাউনলোড করে গ্রাফিক ডিজাইন শিখে ফেলুন।
আর্টিকেলটি ভালো লাগলে ঘুরে আসুন আমাদের ফেসবুক পেজ থেকে।