ডিজিটাল মার্কেটিং কি এবং কিভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং করতে হয় শিখে বাড়িতে বসেই হাজার হাজার ডলার ইনকাম করতে চান? তাহলে এই বিস্তারিত গাইডলাইনটি পড়ে ফেলুন এখনই!

ডিজিটাল মার্কেটিং কি, ডিজিটাল মার্কেটিং কিভাবে করতে হয় এবং ডিজিটাল মার্কেটিং শিখে কত টাকা ইনকাম করা যায় – এ বিষয়গুলো সম্পর্কে এখনকার সবার মধ্যেই অনেক বেশি আগ্রহ লক্ষ্য করা যায়। এ আগ্রহের কারণ মূল কারণ হলো ডিজিটাল মার্কেটিং ছাড়া বর্তমানে ব্যবসা অথবা নিজের কোম্পানিকে সবার সামনে তুলে ধরার কথা কল্পনাও করা যায় না। সত্যি বলতে, ডিজিটাল মার্কেটিং এমন একটি স্কিল যেটির কদর আগামী কয়েক বছরেও কমবে না। এ কারণে এখন আগের চাইতে অনেক বেশি সংখ্যক তরুণ-তরুণীরা ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার কাজে নিজেদের নিযুক্ত করছেন। 

তবে যারা নতুন, তাদের জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং কি,  ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের কাজের সেক্টর, ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের উপায় এবং ডিজিটাল মার্কেটিং করে প্রতি মাসে কত টাকা ইনকাম করা সম্ভব ইত্যাদি বিষয়গুলো সম্পর্কে একটি ডিটেইলড গাইডলাইন প্রয়োজন হয়। এই গাইডলাইন বেশিরভাগ জায়গা থেকে পাওয়া সম্ভব হয় না বিধায় নতুনরা সিদ্ধান্ত নিতে পারেনা যে তারা এ সেক্টরে ক্যারিয়ার ডেভেলপ করবেন কিনা। 

তাই আজকের লেখায় আমি আলোচনা করবো ডিজিটাল মার্কেটিং কি, ডিজিটাল মার্কেটিং কিভাবে করতে হয় এবং ডিজিটাল মার্কেটিং করে মাসে কত টাকা আয় করা সম্ভব ইত্যাদি বিষয় নিয়ে, যাতে করে আপনারা আইডিয়া পান যে সম্ভাবনাময় এই সেক্টর আপনার জন্য পারফেক্ট হবে কিনা। 

ডিজিটাল মার্কেটিং কি ও কেন প্রয়োজন? 

ডিজিটাল মার্কেটিং কি সেই ব্যাপারে একটু ধারণা দিয়েই আজকের লেখাটি শুরু করা যাক। সোজা বাংলায় ডিজিটাল মার্কেটিং হলো ইন্টারনেটের সাহায্যে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে মার্কেটিং করা। ডিজিটাল মার্কেটিং হচ্ছে এমন এক ধরনের মার্কেটিং যেখানে মার্কেটিংয়ের পুরো প্রক্রিয়াটি অনলাইনের সাহায্যে পরিচালিত হয়ে থাকে। ডিজিটাল মার্কেটিং অনেক প্রকারের হয়ে থাকে। এগুলোর মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, কন্টেন্ট মার্কেটিং, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন, ইমেইল মার্কেটিং, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এগুলোর জনপ্রিয়তা সবার মাঝে সবচেয়ে বেশি। বলে রাখা ভাল একেক প্রকারের ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার জন্য আলাদা আলাদা স্কিলের প্রয়োজন হয়। 

ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে জানতে হলে পড়ুনঃ 

ফ্রিল্যান্সিং কি? নতুনরা কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবেন? Ultimate Freelancing Guideline 2022

ডিজিটাল মার্কেটিং কি সেটি তো বললাম। এখন প্রশ্ন হলো অনলাইনে কিসের মার্কেটিং করা হয়? ডিজিটাল মার্কেটিং ব্যবহার করে অনলাইনের বিভিন্ন প্লাটফর্মে যেমন ফেসবুক ইনস্টাগ্রাম, গুগোল কিংবা ইউটিউবে নিজের বিজনেস কিংবা নিজের কোম্পানির প্রমোশন চালানো হয়। এ প্রমোশন চালানোর জন্য বিভিন্ন ইমেজ,ভিডিও বা টেক্সট কন্টেন্ট এর ব্যবহার করা হয়। 

এবার আসি ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে। কয়েক বছর আগেও কিন্তু ডিজিটাল মার্কেটিং এতটা জনপ্রিয় ছিল না। তখন সবাই প্রমোশন চালানো অর্থাৎ বিজ্ঞাপন দেয়ার জন্য বেছে নিতেন টেলিভিশ, বিলবোর্ড অথবা নিউজপেপার নামক প্লাটফর্ম গুলোকে। কিন্তু এখন ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা এবং ইন্টারনেটের খরচ অনেক কমে যাওয়ার কারণে সবাই অনলাইনের বিভিন্ন জনপ্রিয় প্লাটফর্ম যেমন গুগল, ইউটিউব, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার, পিন্টারেস্ট ইত্যাদি ব্যবহার করেন। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণেই মূলত ডিজিটাল মার্কেটিং ধীরে ধীরে এত বেশি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। 

যদি আমি এখনকার প্রেক্ষাপটে বলি, ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের ফলে বর্তমানে সবাই অনেক কম খরচে নিজের বাড়িতে বসে নিজেদের বিজনেস কিংবা কোম্পানির পরিচিতি বাড়াতে পারছেন। ডিজিটাল মার্কেটিং কাজে লাগিয়ে বহু মানুষ তাদের বিজনেসে প্রচুর পরিমাণে সেল জেনারেট করছেন। 

শুধু বিজনেস এর ব্যাপারে বলছি কেন, এখন অনেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, চাকুরির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে মানুষের সামনে পরিচিত করে তুলতে সাহায্য নিয়েছেন ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের। তাই এটুকু বলা যেতে পারে যে ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রয়োজনীয়তা এখনকার যুগে অনেক বেশি এবং এর প্রয়োজনীয়তা সময়ের সাথে বাড়তে থাকবে। আশা করি এখন ডিজিটাল মার্কেটিং কি এবং এর প্রয়োজনীয়তা কত বেশি সে ব্যাপারে সবাই ক্লিয়ার আইডিয়া পেয়ে গেছেন। 

ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে আরো জানতে পড়ুনঃ 

ডিজিটাল মার্কেটিং কি এবং কিভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং করতে হয় শিখে বাড়িতে বসেই হাজার হাজার ডলার ইনকাম করতে চান? তাহলে এই বিস্তারিত গাইডলাইনটি পড়ে ফেলুন এখনই!

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি? সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কেন শিখবেন? এই মার্কেটিং করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

ডিজিটাল মার্কেটিং ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে করবেন?

ডিজিটাল মার্কেটিং কি সে সম্পর্কে জানার পর সবাই নিশ্চয়ই এ মার্কেটিং করার উপায় সম্পর্কে জানতে চাইবেন৷ তাই আমি এখন বলবো কিভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং করতে হয়। যেহেতু ডিজিটাল মার্কেটিং অনলাইনের বিভিন্ন প্লাটফর্মে করা হয় তাই যদি এই মার্কেটিং করতে চান তাহলে প্রতিটি প্ল্যাটফর্মে মার্কেটিং করার ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে সম্পর্কে জানা থাকতে হবে। কারণ সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং যেভাবে করা হয় সেই একই প্রক্রিয়ায় আপনি কখনোই এসইও করতে পারবেন না। আবার ইমেইল মার্কেটিংয়ের প্রক্রিয়ায় কিন্তু অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারবেন না। এ কারণে যদি ডিজিটাল মার্কেটিং করতে চান তাহলে শুরুতেই ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রকারভেদ গুলো থেকে যে কোন একটি বেছে নিতে হবে এবং সেটিতে দক্ষতা অর্জন করতে হবে।এবার আসি এই মার্কেটিং কিভাবে করবেন সে প্রসংগে।

  • সোশাল মিডিয়া মার্কেটিং 

আপনারা যারা ডিজিটাল মার্কেটিং কি এবং এই মার্কেটিং কিভাবে করতে হয় সেটি সম্পর্কে আগে গুগলের সার্চ করেছেন, তারা নিশ্চয়ই সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কথাটি শুনেছেন। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের অন্যতম একটি অংশ। তাই আমি শুরুতেই সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং নিয়ে বলি।

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ে ফেসবুক,টুইটার  লিংকডইন কিংবা ইনস্টাগ্রামের মতো বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া সাইটে মার্কেটিং করা হয়। বলে রাখা ভালো এই সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং আপনি যেমন বিনামূল্যে করতে পারবেন আবার চাইলে কিছু টাকা খরচ করার মাধ্যমেও করতে পারবেন। তবে যারা বাংলাদেশের রয়েছেন তারা কিন্তু বাংলাদেশী টাকা ব্যবহার করে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করতে পারবেন না। কেননা সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করার জন্য যে অর্থ প্রয়োজন হয় সেটি ডলার কারেন্সিতে পে করতে হয়। 

 

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ের মধ্যে ফেসবুক মার্কেটিং সবচেয়ে জনপ্রিয়। যেহেতু সোশ্যাল মিডিয়া গুলোর মধ্যে ফেসবুকের ইউজার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, তাই বিভিন্ন বিজনেস কিংবা কোম্পানি প্রমোশন করার জন্য ফেসবুককেই বেছে নেয়া হয়ে থাকে। ফেসবুক মার্কেটিং করার জন্য একটি ফেসবুক পেজ থাকা আবশ্যক। সাথে যদি ফেসবুক গ্রুপ থাকে তাহলে আরো ভালো।   

যদি বিনামূল্যে ফেসবুক মার্কেটিং করতে চান, তাহলে তাহলে প্রথমেই পেজটিতে লাইক বাড়াতে হবে। কারণ পেজে লাইক যত বাড়বে, আপনি মার্কেটিং করলে সেটির রিচ যত বেশি হবে। পেজে নিয়মিত উন্নত মানের কোয়ালিটি কন্টেন্ট পোস্ট করতে হবে। আপনি যত বেশি নিয়মিতভাবে কোয়ালিটি সম্পন্ন কনটেন্ট পোস্ট করবেন, আপনার পোস্টে রিচ ততবেশি হবে এবং আপনার মার্কেটিং ততবেশি সাকসেসফুল হবে। 

যদি আপনি তুলনামূলক অল্প সময়ে ভাল আউটপুট পেতে চান, তাহলে আপনাকে ফেসবুকে পেইড মার্কেটিং করতে হবে। এটিকে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের ভাষায় সোশাল মিডিয়া অ্যাড ক্যাম্পেইন বলে৷ পেইড মার্কেটিং করার জন্য প্রথমে অডিয়েন্স টার্গেটিং করে নিতে হবে। অডিয়েন্স টার্গেটিংয়ের মাধ্যমে আপনি কোন ধরনের অডিয়েন্সদের টার্গেট করে মার্কেটিং করতে চান সেটি ঠিক করে নেওয়া হয়। এরপর মার্কেটিংয়ের কন্টেন্ট অর্থাৎ ইমেজ, টেক্সট বা ভিডিও অ্যাড করে প্রয়োজনীয় ডলার পে করতে হয়৷ তারপর ক্যাম্পেইন চালু হয়৷

ইনস্টাগ্রামের মার্কেটিং প্রক্রিয়াও অনেকটা ফেসবুকের মতোই। ইনস্টাগ্রামে ফেসবুকের মত অডিয়েন্স টার্গেটিং করে নির্দিষ্ট ডলার পে করে এড ক্যাম্পেইন চালানো যায়। এছাড়াও যদি আপনি হ্যাশট্যাগ রিসার্চ অর্থাৎ কোন হ্যাশট্যাগ গুলো ইনস্টাগ্রামের ইউজাররা বেশি ব্যবহার করেন সেটি ফাইন্ড আউট করে সেই হ্যাশট্যাগ পোস্টের শেষে ব্যবহার করতে পারেন, তাহলে বিনামূল্যেও ইনস্টাগ্রাম মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে ভালো আউটপুট পেতে সক্ষম হবেন। 

  • এসইও বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন 

এসইও বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের এমন একটি অংশ, যেটি সম্পর্কে যারা ডিজিটাল মার্কেটিং কি সেটি জানতে চান তাদের প্রত্যেকের আইডিয়া থাকা উচিত। এসইও বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এমন একটি স্টেপ বাই স্টেপ প্রসেস যেটির মাধ্যমে কোন একটি ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনের সার্চ রেজাল্টের প্রথম সারিতে নিয়ে আসা হয়। এসইও এর মূল লক্ষ্যই সাইট সার্চ ইঞ্জিনে র‍্যাংক করিয়ে ভিজিটর নিয়ে আসা। তাই যারা ডিজিটাল মার্কেটিং কি সে সম্পর্কে জানতে ও শিখতে আগ্রহী, তাদেরকে এসইও শেখার পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে। এসইও বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। যেমন অনপেজ এসইও, অফ পেজ এসইও,লোকাল এসইও টেকনিক্যাল এসইও ইত্যাদি। 

এগুলোর মধ্যে অনপেজ এসইও একটি ওয়েবসাইট গুগলে র‍্যাংক করার সাথে সরাসরি সম্পর্কিত। কেননা অনপেজ এসইওর মাধ্যমেই একটি ওয়েব সাইটের কন্টেন্ট গুগলে বা সার্চ ইঞ্জিনে র‍্যাংক করে থাকে। অনপেজ এসইও এর ক্ষেত্রে কী ওয়ার্ড এর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিওয়ার্ড হচ্ছে সেসব শব্দ যেগুলো আমরা গুগল বা অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনের সার্চবারে সার্চ করে থাকি কোনো একটি বিষয়ে তথ্য খুজে বের করার জন্য। 

যখন একটি সাইটের কনটেন্টে অনপেজ এসইও করা হয় তখন এই কি-ওয়ার্ড গুলোই কনটেন্টের মাঝে ন্যাচারালি প্লেস করা হয়। এর পাশাপাশি কিওয়ার্ড কনটেন্টের টাইটেলে, কনটেন্টের হেডিংয়ে এবং পার্মালিংকে অ্যাড করা হয়। সাথে ইমেজ অল্টার ট্যাগও ব্যবহার করা হয় যাতে করে কন্টেন্টের সাথে অ্যাড করা ছবির মাধ্যমে কন্টেন্টটি র‍্যাংক করতে পারে। তারপর কন্টেন্টটি পাবলিশ করা হয় এবং র‍্যাংক করার জন্য অপেক্ষা করতে হয়। এভাবেই অন পেইজ এসইও এর বিভিন্ন ট্রিক কাজে লাগিয়ে ওয়েবসাইট র‍্যাংক করানো হয়ে থাকে। 

অন পেইজ এসইও ছাড়াও অফ-পেইজ এসইও এবং টেকনিক্যাল এসইও ব্যবহার করেও সাইট গুগলে র‍্যাংক করানো হয়। মোট কথা, এসইও ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের এমন একটি সেক্টর যে সম্পর্কে সবার জ্ঞান থাকতে হয়। কারণ আপনি যদি এসইও জানেন, তাহলে সেটি সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ইত্যাদি ক্ষেত্রেও অনেক সাহায্য করে। 

  • অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং 

যখন আপনার গুগল না ইউটিউবে ডিজিটাল মার্কেটিং কি এবং এর প্রকারভেদ সম্পর্কে সার্চ করবেন, তখন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের কথা নিশ্চয়ই শুনে থাকবেন। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের এমন একটি সেক্টর, যে সেক্টরে যদি ধৈর্য্য নিয়ে লেগে থাকা যায়, তাহলে মাসে হাজার হাজার ডলার ইনকাম করাও অসম্ভব কিছু নয়। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হচ্ছে একটি ওয়েবসাইটের কোন প্রোডাক্ট কিংবা সার্ভিস নিজের ওয়েবসাইটে বা ব্লগে সেল করা। অনেকে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে থাকলেও যদি সবচেয়ে ভাল আউটপুট চান, তাহলে নিজের একটি ওয়েবসাইট থাকতেই হবে। 

এবার আসি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের প্রসেস সম্পর্কে। বর্তমানে আমাজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মধ্যে সবচাইতে জনপ্রিয়। যদি আমাজনের অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার হতে চান, তাহলে শুরুতেই আপনাকে একটি নিশ সিলেক্ট করে নিতে হবে। এখানে নিশ বলতে আপনি কোন ক্যাটাগরির প্রোডাক্ট এর উপর মার্কেটিং করবেন সেটি বোঝানো হয়ে থাকে। নিশ সিলেক্ট করার সময় কোন ক্যাটাগরির প্রোডাক্ট কাস্টমাররা বেশি কিনছেন এবং বেশি সার্চ করছেন সেটি রিসার্চ করা হয়। নিশ সিলেক্ট করার পর নিজের একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে হয় এবং সে ওয়েবসাইটে নিশ রিলেটেড বিভিন্ন প্রোডাক্টয়ের রিভিউ লিখে পোস্ট করতে হয়। 

এখন প্রশ্ন হলো তাহলে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে হবে ? অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং যদি আপনি আমাজনের মাধ্যমে করতে চান তাহলে আপনাকে আমাজনে রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হবে। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার হিসেবে রেজিস্ট্রেশন করার পর আপনাকে একটি কাস্টম লিংক প্রদান করা হবে। এই লিংকটি আপনি আপনার ওয়েবসাইটের প্রোডাক্ট রিভিউ এর সাথে প্লেস করবেন। 

এরপর আপনার সাইটে প্রোডাক্ট রিভিউ পড়ার পর যদি কোনো রিডার আমাজন থেকে সেই প্রোডাক্টটি পারচেজ করতে চান এবং তিনি আপনার দেয়া লিংকের মাধ্যমে পারচেজ করেন, তাহলে আপনি সেখান থেকে নির্দিষ্ট রেটে কমিশন পাবেন। এভাবে আপনার দেয়া লিংক থেকে যত বেশি কাস্টমার আমাজন থেকে প্রোডাক্ট কিভাবে আপনি ততবেশি কমিশন পাবেন। 

বর্তমানে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য অনেক ওয়েবসাইট থাকলেও আমাজনের জনপ্রিয়তা সবচাইতে বেশি। এ কারণে আমি আমাজন এফিলিয়েট মার্কেটিং নেই আপনাদেরকে একটু আইডিয়া দিলাম। এক্ষেত্রে যদি আপনি ভাল কনটেন্ট রাইটিং পারেন এবং তার সাথে আপনার এসইও সম্পর্কেও নলেজ থাকে, তাহলে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে সাকসেসফুল হওয়ার চান্স অনেক বেড়ে যায়। 

  • ইউটিউব মার্কেটিং 

এবার আসি ইউটিউব মার্কেটিং নিয়ে। ভিডিও দেখার জন্য জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম ইউটিউব। এটির মার্কেটিংকে বলা হয় ভিডিওর মার্কেটিং। ইউটিউবে ভিডিও ক্রিয়েট করার মাধ্যমে মার্কেটিংয়ের কাজ পরিচালনা করা হয়। যদি আপনি ইউটিউব মার্কেটিং করতে চান তাহলে সবার আগে আপনার প্রয়োজন হবে একটি সেটআপ করা ইউটিউব চ্যানেল। ইউটিউব চ্যানেল ক্রিয়েট করে সেটি সেটআপ করার পর চাইলে আপনি আপনার নিজের বিজনেস কিংবা কোম্পানি নিয়ে ভিডিও তৈরি করে সেটি পোস্ট করতে পারেন। 

এক্ষেত্রে পোস্ট করার সময় ভিডিওটি এসইও অপটিমাইজ করে নিতে হবে। মনে রাখবেন যদি আপনি ইউটিউবে এসইও অপটিমাইজড ভিডিও কনটেন্ট পোস্ট করেন, তাহলে ইউটিউব থেকে আপনি প্রচুর ভিউয়ারস পাবেন। এছাড়া যদি আপনি চান তাহলে ইউটিউব অ্যাডস ব্যবহার করে পেইড ইউটিউব মার্কেটিংও করতে পারেন। এক্ষেত্রেও অনেক ভিউয়ার পাওয়া যায়। 

  • ইমেইল মার্কেটিং 

এখনকার সময়ে ডিজিটাল মার্কেটিং কি এই বিষয়ে কথা বলতে গেলে ইমেইল মার্কেটিংয়ের নাম কিন্তু শুরুর দিকেই আসে। নাম শুনেই আপনারা বুঝতে পারছেন এটি ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের এমন একটি সেক্টর যেখানে মার্কেটিং করার মাধ্যম হিসেবে ইমেইল কে বেছে নেওয়া হয়। 

ইমেইল মার্কেটিংয়ে মূলত একটি বিজনেস বা কোন কোম্পানির পটেনশিয়াল কাস্টমার বা ক্লায়েন্টদেরকে ইমেইল সেন্ড করা হয়, যাতে করে তারা সেই প্রোডাক্ট কিংবা সার্ভিস সম্পর্কে আগ্রহ বোধ করে সেগুলো পারচেজ করেন। 

ইমেইল মার্কেটিং করার জন্য প্রয়োজন হয় পটেনশিয়াল ক্লায়েন্টদের ইমেইল এড্রেস যেটি আপনি বিভিন্ন ফ্রি টুল ব্যবহার করে অথবা কিছু ডলার খরচ করে পেইড টুলের মাধ্যমেও করতে পারবেন। শুধুমাত্র নিজের বিজনেস কোম্পানি প্রমোট করার জন্যই নয়, বর্তমানে কিন্তু ফ্রিল্যান্সাররা মার্কেটপ্লেসগুলোর বাইরে নিজেদের পছন্দমতো ক্লায়েন্ট খুঁজে পাওয়ার জন্য ইমেইল মার্কেটিং এর সাহায্য নিয়ে থাকেন। 

ডিজিটাল মার্কেটিং

ডিজিটাল মার্কেটিং শিখে কত টাকা ইনকাম করা যায়? 

যারা ইতোমধ্যেই ডিজিটাল মার্কেটিং কি, এই মার্কেটিং এর প্রকারভেদ এবং এ মার্কেটিং করার উপায় সম্পর্কে জেনেছেন তারা নিশ্চয়ই এখন জানতে চাইবেন ডিজিটাল মার্কেটিং শিখে কত টাকা ইনকাম করা সম্ভব। যদি ২০২২ সালের প্রেক্ষাপটে বলতে চাই, তাহলে এটুকু চোখ বন্ধ করে বলতে পারি ডিজিটাল মার্কেটিং এমন একটি সেক্টর যে সেক্টরে যদি দক্ষতার সাথে কাজ করতে পারেন, তাহলে প্রতি মাসে নিজের বাড়িতে বসেই আপনি হাজার ডলারের ওপরেও ইনকাম করতে পারবেন। এর কারণ হলো এখন একজন এক্সপার্ট ডিজিটাল মার্কেটারের সবক্ষেত্রেই দারুন চাহিদা রয়েছে। একজন ডিজিটাল মার্কেটার চাইলে ফ্রিল্যান্সিং করে, কোন প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করে অথবা নিজের ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সিতে নিয়মিত কাজ করার মাধ্যমে এক মাসে হাজার ডলার ইনকাম করতে সক্ষম। 

যদি একজন দক্ষ ডিজিটাল মার্কেটার বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং সাইট যেমন ফাইভার, আপওয়ার্ক কিংবা ফ্রিল্যান্সিং ডট কমে প্রতিদিন ক্লায়েন্টদেরকে ডিজিটাল মার্কেটিং রিলেটেড বিভিন্ন সার্ভিস যেমনঃ সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজ, পেইজ বুস্ট, অ্যাড ক্যাম্পেইন, এসইও ফ্রেন্ডলি কন্টেন্ট রাইটিং, আমাজন প্রোডাক্ট রিভিউ রাইটিং, সাইট এসইও ইত্যাদি সার্ভিস দিয়ে থাকেন, তাহলে প্রতিদিন তিনি ১০০ ডলারের উপরে আয় করতে পারেন। কি বিশ্বাস হচ্ছে না? আমি কিন্তু একটুও বাড়িয়ে বলছি না। যদি আপনি বাংলাদেশ থেকে বাইরের দেশের বিভিন্ন ক্লায়েন্টের সাথে এসব ফ্রিল্যান্সিং সাইটের মাধ্যমে কাজ করেন তাহলে প্রতিমাসে বড় অঙ্কের টাকা ইনকাম করা সম্ভব হবে। 

ফ্রিল্যান্সিং সাইট সম্পর্কে জানতে পড়ুন 

ফ্রিল্যান্সিং সাইট কি? ফ্রিল্যান্সিং সাইটে কাজের সুবিধা কি কি? ২০২২ সালের সেরা ৫টি ফ্রিল্যান্সিং সাইট সম্পর্কে জেনে নিন আজই!

শুধু ফ্রিল্যান্সিং সাইটে কাজ করেই নয়, আপনি চাইলে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল মার্কেটিং এক্সপার্ট কিংবা এসইও এক্সপার্ট হিসেবে চাকরি করতে পারেন। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানেই একজন এক্সপার্ট ডিজিটাল মার্কেটারের স্যালারি শুরু হয় ২৫ হাজার টাকা থেকে এবং একজন এসইও স্পেশালিস্টের স্যালারি রেঞ্জ শুরু হয় ৩০ হাজার টাকা থেকে। যদি আপনি চান নিজের স্কিল দিয়ে কোন প্রতিষ্ঠানে কাজ করে প্রতিমাসে নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা ইনকাম করতে, তাহলে আপনি এসব প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করতে পারেন। 

এছাড়াও আপনি যদি চান তাহলে নিজের ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি শুরু করতে পারেন। ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সির মাধ্যমে আপনি নিজের পছন্দমত ক্লায়েন্টের সাথে কাজ করতে পারবেন। এক্ষেত্রে যদি কয়েকজনের টিম নিয়ে এজেন্সি শুরু করতে পারেন তাহলে আরো ভালো। কারণ যখন আপনার ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি টিমে একজন এক্সপার্ট কনটেন্ট রাইটার, একজন এসইও এক্সপার্ট ও একজন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এক্সপার্ট থাকবেন, তখন আপনি সব ধরনের ক্লায়েন্টদের সাথেই কাজ করতে পারবেন। এতে করে যখন এজেন্সি গ্রো করবে, তখন প্রতিমাসে অন্তত ১০০০ ডলারের ওপরে তো আসবেই! 

তবে যারা ডিজিটাল মার্কেটিং কি এবং এই মার্কেটিং শিখে কত টাকা ইনকাম করা যায় সেটি শোনার পর ডিজিটাল মার্কেটিং না শিখেই কাজ করা শুরু করে দিতে চান, তারা কিন্তু কখনোই এত টাকা ইনকাম করতে পারবেন না। কেননা ডিজিটাল মার্কেটিং সেক্টরের ইনকাম আসেই একজন মার্কেটারের স্কিল কতটুকু সেটির উপর ভিত্তি করে। 

একারণে পরামর্শ থাকবে যদি এই সেক্টরে নিজের ক্যারিয়ার বিল্ডআপ করতে চান, তাহলে শুরুতেই নিজের স্কিল বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দিন। ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের সব সেক্টরের কাজ একসাথে শেখা শুরু না করে একটি একটি সেক্টরে কাজ শেখা শুরু করুন। এতে করে দেখবেন আপনার সব সেক্টর সম্পর্কে আইডিয়া থাকবে এবং অন্তত একটি বা দু’টি সেক্টরে খুব ভালোমতো স্কিল ডেভেলপ হবে। তখন আপনিও প্রতিমাসে হাজার হাজার ডলার ইনকাম করতে পারবেন।  

এটুকুই ছিল ডিজিটাল মার্কেটিং কি, ডিজিটাল মার্কেটিং করার উপায়, ডিজিটাল মার্কেটিং করে কত টাকা ইনকাম করা যায় এবং ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার কিভাবে গড়বেন সে সম্পর্কিত আজকের বিস্তারিত আলোচনা। আমি আশা করি আপনারা আজকের এই আলোচনা থেকে অনেক কিছু শিখতে পেরেছেন। 

আর্টিকেলটি ভালো লাগলে ঘুরে আসুন আমাদের ফেসবুক পেইজ থেকে!

 

Leave a Comment