এক পলকে জেনে নিন মধুর গুনাগুন

মধু প্রাকৃতিকভাবে সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী বিশুদ্ধ মিষ্টি পানীয়জাত খাদ্যদ্রব্য। মধু যুগ যুগ ধরে প্রাকৃতিক গুণ সম্পন্ন সুস্বাদু খাবার হিসেবে সমাদৃত।

Covid -19 এর এই সময়ে আপনার ইমিউনিটি শক্তি বাড়াতে মধু খুবিই কার্যকরী। এটি শরীরের জন্য উপকারি এবং নিয়মিত মধু সেবন করলে অসংখ্য রোগবালাই থেকে নিরাপদ থাকা যায়।

আজ আমরা জেনে নেবো মধুর গুনাগুন সম্পর্কেঃ

 

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে মধুঃ মধু শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়ায়। তাপ ও শক্তির ভালো উৎস। মধু দেহে তাপ ও শক্তি জুগিয়ে শরীরকে সুস্থ রাখে।

হৃদরোগেঃ এক চামচ মৌরি গুড়োর সাথে এক/দুই চামচ মধুর মিশ্রণ হৃদরোগের ঔষধ হিসেবে কাজ করে। এছাড়াও ফুসফুসের যাবতীয় রোগ ও শ্বসকষ্ট নিরাময়ে মধু খুব উপকারী।

ওজন কমাতেঃ মধুতে কোনো চর্বি উপাদান নেই।পেট পরিষ্কার করে, চর্বি কমায়, ফলে ওজন কমে।মধু খেলে পাকস্থলী থেকে বাড়তি গ্লুকোজ তৈরি হয় যার জন্য মস্তিষ্কের সুগার লেভেল বেড়ে যায় এবং মেদ কমানোর হরমন নিঃসরণের জন্য রীতিমতো চাপ সৃষ্টি করে।ফলে মেদ কমার সুযোগ তৈরি হয়।

অনিদ্রায়ঃ মধু অনিদ্রার ভালো ঔষুধ। রাতে শোয়ার আগে এক গ্লাস পানির সঙ্গে দুই চা চামচ মধু মিশিয়ে খেলে এটি গভীর ঘুম আনতে সহায়তা করে।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ মধুতে থাকা ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স ডায়রিয়া এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।এক চা চামচ খাঁটি মধু পান করলে এসিডিটি দূর হয়।

রূপচর্চাঃ  মেয়েদের রূপচর্চার ক্ষেত্রে মাস্ক হিসেবে মধুর ব্যবহার বেশি জনপ্রিয়। মুখের ত্বকের মসৃণতা বৃদ্ধির জন্যও মধু ব্যবহৃত হয়।

রক্তশূণ্যতায়ঃ মধু রক্তের হিমোগ্লোবিন গঠনে সহায়তা করে বলে এটি রক্তশূণ্যতায় বেশ উপকারী। রক্ত উৎপাদনকারী উপকরণ আয়রন রয়েছে মধুতে। আয়রন রক্তের উপাদানকে অধিক কার্যকর ও শক্তিশালী করে।

শরীরে তাপ উৎপাদনেঃ শীতের সময় ঠান্ডার মধ্যে এটি শরীরকে গরম রাখে। এক/দুই চা চামচ মধু এক কাপ ফুটানো পানির সঙ্গে খেলে উপকার পাওয়া যাবে।

পানি শূণ্যতা রোধে মধুঃ  ডায়রিয়া হলে এক লিটার পানিতে ৫০ মি.লি. মধু মিশিয়ে খেলে দেহে পানি শূণ্যতা রোধ করা যায়।

দৃষ্টিশক্তি বাড়াতেঃ গাজরের রসের সাথে মধু মিশিয়ে খেলে দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।

তারূণ্য বজায় রাখতেঃ তারূণ্য বজায় রাখতে মধুর ভুমিকা অতুলনীয়। মধু ত্বকের রঙ ও ত্বক সুন্দর করে, ত্বকের ভাজ পড়া রোধ করে এবং শরীরের সামগ্রিক শক্তি বজায় রাখে।

হাঁপানী রোধেঃ আধা গ্রাম গুড়ো গোলমরিচের সাথে সাথে সমপরিমাণ মধু ও আদা মিশিয়ে নিন। দিনে অন্তত তিনবার এই মিশ্রণটি খান। এটা হাঁপানি রোধে সহায়তা করে।

হাড় ও দাঁত গঠনেঃ মধুর গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ক্যালসিয়াম। ক্যালসিয়াম দাঁত, হাড়, চুলের গোড়া শক্ত করে। নখ উজ্জ্বল রাখে ও ভেঙে যাওয়া রোধ করে।

উচ্চ রক্তচাপ কমায়ঃ দুই চামচ মধুর সাথে এক চামচ রসুনের রস মিশিয়ে সকাল-সন্ধ্যা দুইবার এই মিশ্রণ খাবেন। প্রতিদিন এর ব্যবহার উচ্চ রক্তচাপ কমাবে। তবে এটি সকালে খাওয়ার এক ঘন্টা আগে খাওয়া উচিৎ।

রক্ত পরিষ্কারক হিসেবেঃ এক গ্লাস গরম পানির সাথে এক/দুই চামচ মধু ও এক চামচ লেবুর রস মেশান। এটি রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করে এবং রক্তনালিও পরিষ্কার করে।

রক্ত উৎপাদনে সহায়তাকারী হিসেবেঃ রক্ত উৎপাদনকারী উপকরণ হিসেবে মধুতে রয়েছে আয়রন যা রক্তের উপাদানকে অধিক কার্যকরী ও শক্তিশালী করে।

মধুর তেমন কোন অপকারি ভুমিকা নেই তবে মধু বেশি খাওয়া ঠিক নয়। অতিরিক্ত মধু খেলে শরীরের মধ্যে জ্বালা বা অস্থিরতা অনুভব হতে পারে। সুতরাং পরিমিত পরিমাণে মধু খাওয়া উচিত।

তাপমাত্রা ৪২সেন্টিগ্রেডের উপরে হলে মধুর গুনাগুন পরিবর্তন হয়ে বিষাক্ত হয়ে যায়। তাই আপনি অবশ্যই খেয়াল রাখবেন চা অথবা পানির সাথে মধু মেশানোর সময় যেন চা বা পানি অতিরিক্ত গরম না থাকে। কুসুম গরম হলে তখনই মেশাবেন। এবং মধু কখনোই গরম করবেন না বা রান্নায় ব্যবহার করবেন না।

 

Leave a Comment