2022 সালের Best কয়েকটি বিজনেস আইডিয়া সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে এখুনই এই আর্টিকেলটি পড়ে ফেলুন ও লাভবান হোন!

আপনি কী এমন কোনো বিজনেস আইডিয়া  খুঁজছেন যা বাংলাদেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ? আমরা অনেকেই ইন্টারনেটে গুগলের মাধ্যমে সার্চ করে এবং বিভিন্ন ব্লগ পড়ে বিজনেস আইডিয়া সম্বন্ধে ধারণা নিয়ে থাকি। ব্যবসায়ী থেকে উদ্যোক্তা – সবাই এমন কিছু বিজনেস আইডিয়া খুঁজে থাকেন যাতে সবাই কম বিনিয়োগে লাভের মুখ বেশি দেখতে পান।  তবে এটি এতটা সহজ নয় যতটা আমরা ভাবছি,  কারণ স্বল্প ইনভেস্টমেন্টে সঠিক বিজনেস আইডিয়া  খুঁজে ব্যবসা শুরু করা বা উদ্যোক্তা হওয়া বর্তমানে প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে বেশ কঠিন একটি ব্যাপার। 

বিশেষ করে মহামারীর এই সময়ে সঠিক বিজনেস আইডিয়া  নির্বাচন করা একটি চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা অনেকেই ভেবে পাচ্ছিনা কোন  বিজনেস আইডিয়াটি আমাদের জন্য উপযুক্ত আর কোনটি নয়। এরমধ্যে অনেকেই আছেন যারা স্বল্প পুঁজি নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে চাইছেন। বিশেষ করোনার এই সময়টিতে প্রচুর মানুষ বেকারত্বের কবলে পড়েছেন। স্কুল, কলেজ, কোচিং সেন্টার, অফিস ইত্যাদি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের অর্থনীতি এবং মানুষের দৈনন্দিন জীবনে অনেক দুর্দশা নেমে এসেছিলো। 

তবে মহামারীর অন্য একটি ভালো দিক হচ্ছে এ সময় প্রচুর মানুষ ব্যবসামুখী হয়েছেন নতুন নতুন বিজনেস আইডিয়া নিয়ে। গবেষকরা বলছেন করোনার এ সময় ১৬ শতাংশের বেশি মানুষ নতুন বিজনেস আইডিয়া নিয়ে ব্যবসা শুরু করছেন। আবার এই ২০২২ সালে অনেকেই আছেন যারা নতুন বিজনেস আইডিয়া নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে চাচ্ছেন। নতুন  বিজনেস আইডিয়া নিয়ে অনেকেরই মনে অনেক আগ্রহ থাকে । আজকের এই লেখায় আমি ২০২২ সালের সেরা কয়েকটি বিজনেস আইডিয়া নিয়ে আলোচনা করবো, যেগুলো থেকে আপনারা আইডিয়া পেতে পারবেন যে কোন বিজনেস আইডিয়াটি আপনাদের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত। 

কিভাবে ব্যবসার আইডিয়া পাবেন? 

আমরা অনেকেই কোথা থেকে বিজনেস আইডিয়া  পাবো তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগছি। বিজনেস আইডিয়া খুঁজে বের করার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো সমস্যা চিহ্নিত করা। আমরা আমাদের আশেপাশে তাকালেই এমন অনেক সমস্যা দেখতে পারবো যেগুলোর জন্য মানুষ সর্বত্রই ভুক্তভোগী হচ্ছে। আর এই প্রতিটি সমস্যার একটি সম্ভাব্য ব্যবসায়িক সুযোগ আছে, যদি সমস্যাগুলো আপনি কোনো ব্যবসার মাধ্যমে সমাধান করতে পারেন। তাই, আপনি যদি বিজনেস আইডিয়া   পেতে চান তাহলে প্রথমে সমস্যাগুলি চিহ্নিত করুন এবং ব্যবসার মডেলের মাধ্যমে সেগুলো সমাধান করুন। 

এছাড়া বিজনেস আইডিয়া সম্পর্কে গুগলে সার্চ করেও ভালো ধারণা পেতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে বলে রাখা ভালো, আপনি যদি দক্ষ না হন এবং সঠিক লক্ষ্য নিয়ে ব্যবসা শুরু না করেন তাহলে এমন হাজার হাজার বিজনেস আইডিয়া থেকে একটি পয়সাও আয় করতে পারবেন না। 

যেকোন ব্যবসা শুরু করার আগে কি করা উচিত?

যেকোনো বিজনেস আইডিয়া  নিয়ে ব্যবসা শুরু করার পূর্বে এর মাপযোগ্যতা নিয়ে চিন্তা  করুন। আপনি আপনার বিজনেস আইডিয়াটিকে ব্যবসায় যখন রূপান্তরিত করবেন তখন সেটিকে প্রসারিত করতে পারবেন কি পারবেন না সেটি আসলে নির্ভর করে মাপযোগ্যতা  উপর। 

এরপর যে বিজনেস আইডিয়া  নিয়ে আপনি বিজনেস করতে যাচ্ছেন সেই বিষয়ে আপনার দক্ষতা কেমন এটি যাচাই করুন। কিছু ব্যবসা দক্ষতা ছাড়া সম্পাদিত হতে পারে আবার কিছু দক্ষতা ছাড়া সম্ভব হবে না।  

আবার আপনি যদি আপনার বিজনেস আইডিয়াকে দ্রুত প্রসারিত করতে চান, তাহলে আপনাকে অবশ্যই আপনার ব্যবসার অনলাইন উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। কারণ বর্তমানে অনলাইন ব্যবসা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

সর্বশেষ যে বিষয়টি সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ সেটি হলো সততা। সততা যে কোন ব্যবসার প্রধান মূলধন। সুতরাং সততা ছাড়া আপনার বিজনেস আইডিয়া মাধ্যমে তৈরিকৃত ব্যবসা অবশ্যই  অবশ্যই ব্যর্থ হবে

ব্যবসার ধরন অনুযায়ী 2022 সালে লাভজনক ব্যবসার আইডিয়াকে ৩ শ্রেণীতে বিভক্ত করা যায়

 ১/ ঘরে বসে ব্যবসা করা 

বর্তমানে এটি একটি জনপ্রিয় মাধ্যম, যেখানে এমন কিছু অনলাইন বিজনেস আইডিয়া আছে যার মাধ্যমে অনেকেই ঘরে বসে আয় করতে পারেন। ঘরে বসে আয় করার একটি সুবিধা হচ্ছে অল্প পুঁজি, মেধা ও শ্রমকে কাজে লাগিয়ে ব্যবসায় সহজে সফলতা অর্জন করা যেতে পারে। 

এটির মাধ্যমে  আপনার ব্যবসাটিকে সুন্দরভাবে পরিচালনার মাধ্যমে মাসে ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা আয় করতে পারেন। এরকম কিছু ব্যবসার নাম হচ্ছে টিউটর ব্যবসা, কোচিং ব্যবসা, ই-কমার্স, এফিলিয়েট মার্কেটিং , কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার, ব্লগিং, অনলাইন নিউজপেপার ,ইউটিউব চ্যানেল ইত্যাদি।

 

২/ দোকানের মাধ্যমে ব্যবসা

দোকান ব্যবসার জন্য অবশ্যই একটি সুনির্দিষ্ট দোকানের জায়গা, ভালো পরিমাণ মূলধন এবং ব্যবসা পরিচালনার জন্য দক্ষ জনবল প্রয়োজন হয়ে থাকে। দোকান ব্যবসার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে গ্রাহকদের মানসম্মত সেবা দেওয়া এবং গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী আকর্ষণীয় বিভিন্ন পণ্য প্রদর্শন করা।তবে বর্তমানে এটির সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে বাজার প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা স্ট্যান্ডার্ড কোয়ালিটির প্রোডাক্ট এবং সেবা দিয়ে। এরকম কিছু ব্যবসার নাম হচ্ছে ওষুধের দোকান, কসমেটিকস  দোকান, ফ্যাশন হাউস,গিফট কর্নার, খেলনার দোকান, ইলেকট্রনিক্স ব্যবসা, মুদির দোকান, মোবাইল এক্সেসরিজ, মোবাইল ব্যাংকিং, এজেন্ট ব্যাংকিং ইত্যাদি।

৩/ কৃষি ভিত্তিক ব্যবসা

আমরা সবাই কৃষিপ্রধান দেশের নাগরিক। পূর্বে  যেমন গতানুগতিক কৃষি ব্যবস্থা ছিলো,  সেখান থেকে মানুষ বেরিয়ে এসে এখন বহুমুখী কৃষিভিত্তিক ব্যবসায় জড়িত হচ্ছে। যেমনঃ  মৎস্য চাষ ,ব্রয়লার মুরগির ফার্ম , সবজি চাষ ফল , চাষ পশুপালন সহ অন্যান্য। বর্তমানে বিভিন্ন পোল্ট্রি ফার্ম এবং এগ্রিবিজনেস সেক্টর প্রতিনিয়ত গড়ে উঠছে কারণ এগুলোর চাহিদা পৃথিবী ধ্বংসের আগ পর্যন্ত থাকবে। যদি আপনার বিজনেস আইডিয়া আপনি গ্রামীণ কোন অঞ্চলে গড়তে চান, তাহলে কৃষি ভিত্তিক বিভিন্ন আইডিয়া নিয়ে আপনি আপনার ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

২০২২ সালের সেরা কয়েকটি লাভজনক বিজনেস আইডিয়া

  • খাদ্যদ্রব্যের ব্যবসা এবং কফি শপ

মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলোর মধ্যে খাদ্য হলো অন্যতম। শুধুমাত্র নির্দিষ্ট বয়সের কোনো মানুষের জন্য নয়, শিশু- বড় সবার জন্য খাদ্য প্রয়োজন। আর এই জন্যই খাদ্যের চাহিদা সর্বত্র। আর এই চাহিদার কারণে খাদ্যদ্রব্যের ব্যবসায়ীরা সাধারণত কখনোই ক্ষতিগ্রস্ত হননা। চাহিদা অনুযায়ী আপনি যেকোন খাদ্যদ্রব্য নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে পারেন। আপনার যদি পূর্বে  ব্যবসায়িক অভিজ্ঞতা না থাক,  তাহলে এটি একটি সর্বোত্তম বিজনেস আইডিয়া  হতে পারে, যেখানে আপনি স্বল্প পুঁজিতে অধিক মুনাফা অর্জন করতে পারেন।

এছাড়া বর্তমানে আমাদের দেশে অনেক কফিশপ রয়েছে। আর কফিশপ গুলোতে কফির পাশাপাশি বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্যের আইটেম থাকে। বর্তমান তরুণ সমাজ এবং অফিসগামী মানুষের জন্য কফিশপ একটি আকর্ষণীয় প্লেস। আর কফি শপের জন্য একটি ভালো অবস্থান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় স্কুলের কাছাকাছি পার্ক বা বাণিজ্যিক এলাকা এবং আবাসিক এলাকাতে ভালো কফিশপ সাধারণত খুব কমই থাকে। এজন্য  এসব স্থানে আপনি যদি আপনার কফিশপ বা খাদ্যদ্রব্যের দোকান দিতে পারেন তাহলে প্রতি মাসে অল্প পুঁজিতে ভালো লাভ করার সুযোগ থাকবে।

  • ই- কমার্স

বাংলাদেশের জন্য ই-কমার্স ব্যবসা শুরু করা সহজ। একটি ই-কমার্স সাইট তৈরি করা বেশ সহজ। আপনি ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করে নিজে নিজেই এটি করতে পারেন। আপনি যদি এটি নিজে না করতে পারেন তবে বাজেটের মধ্যে আপনার ওয়েবসাইট ডিজাইন করার জন্য আপনি একজন ফ্রিল্যান্সারও নিয়োগ করতে পারেন।

সাইট বানানো হলে আপনি যা বিক্রি করতে চান তা নির্বাচন করুন এবং সোশ্যাল মিডিয়াতে এটি প্রচার করুন। আপনি সোশ্যাল মিডিয়া থেকে ভালো সেল পেতে পারেন একই সাথে এসইওর মাধ্যমে গুগলে কীওয়ার্ড র‌্যাঙ্ক করুন, যার মাধ্যমে আপনি অর্গানিকভাবেও সেল বাড়াতে পাবেন।

মোট কথা আপনি যদি সঠিকভাবে কাজ করতে পারেন, তবে খুব কম বিনিয়োগের সাথে একটি বিশাল মুনাফা তৈরি করে দিতে সক্ষম এই বিজনেস আইডিয়া ।

  • ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি

সাধারণত একটি ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি ইন্টারনেটের বিজ্ঞাপনের উপর ফোকাস করে এবং এটি সাধারণত বিভিন্ন সামাজিক নেটওয়ার্কিং সাইটে ভিডিও বা গ্রাফিক্স এর মাধ্যমে মার্কেটিং করে থাকে। আপনার যদি ডিজিটাল মার্কেটিং বিষয়ে অভিজ্ঞতা থেকে থাকে তাহলে ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি তৈরি করা আপনার জন্য অনেক সুবিধা হবে। পাশাপাশি এটি স্টার্ট করার খরচ তুলনামূলক কম হয়। 

  • ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ফার্ম 

এখনকার সময়ের জনপ্রিয় লাভজনক বিজনেস আইডিয়া গুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট। দেশে এমন অনেক ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ফার্ম রয়েছে যারা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ইভেন্ট এরেঞ্জ করা এবং সুন্দরভাবে উপস্থাপন করার কাজ করে যাচ্ছে। এর প্রধান কারণ হচ্ছে বর্তমানে যত বড় বড় ইভেন্টের আয়োজন হচ্ছে, তার প্রতিটি ইভেন ম্যানেজমেন্ট ফার্মগুলোকে দিয়ে করানো হয়ে থাকে। কাজেই এর চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে।

ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ফার্মগুলো বরাবরই নতুনত্ব এবং সৃজনশীলতা অনুযায়ী গ্রাহকের চাহিদা ও বাজেটের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট করে থাকে। যেকোন ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ফার্মে কাজ করার মাধ্যমে অনেকেই বিভিন্ন বিষয়ে অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা অর্জন করতে পারে। 

কাজেই আপনি যদি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোন ফার্ম দিতে চান প্রথমে আপনি কোন ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ফার্মে কাজ  করে অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা অর্জন করে নিয়ে নিজেকে দক্ষ করে  নেবেন। 

 

ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ফার্ম ঘরে বসে অল্প পুজিতে আপনি শুরু করতে পারেন। শুরুতে ছোট ছোট ইভেন্ট দিয়ে কাজের অভিজ্ঞতা এবং জনপ্রিয়তা বাড়িয়ে পরবর্তীতে বড় পরিসরে ইভেন্টে কাজ করার মানসিক প্রস্তুতি রাখতে হবে। এছাড়া ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের একটা বড় সুবিধা হচ্ছে এটি করতে তেমন একটা মূলধন লাগে না। কারণ এখানে  পূর্বেই কাস্টমারের থেকে অগ্রিম টাকা নেওয়ার সুযোগ পেয়ে থাকেন। তবে আপনাকে অবশ্যই একটি দক্ষ  টিম তৈরি করে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট করতে হবে কেননা প্রতিযোগিতার বাজারে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট যতটা দক্ষতাসহকারে  করতে পারবেন, তত আপনার চাহিদা বাড়বে। এছাড়া ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে আপনার কানেক্টিভিটি অর্থাৎ যত বেশি মানুষের সাথে আপনার কানেকশন থাকবে তত কাজটি সহজ হবে।

  • ড্রপশিপিং

আপনাদের মধ্যে যারা প্রোডাক্ট স্টোর করার ঝামেলা ছাড়া একটি বিজনেস আইডিয়া খুঁজছেন, তারা চাইলে ড্রপশিপিং শুরু করতে পারেন। 

ড্রপশিপিং সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এই আর্টকেলটি পড়ুন৷ 

  • ইউটিউব চ্যানেল 

ইউটিউব খুবই জনপ্রিয় বিনামূল্যে ভিডিও স্ট্রিমিংয়ের মাধ্যম। বর্তমানে এমন কোনো মানুষ নেই, যারা ভিডিও প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ইউটিউব দেখে না। কিছু গবেষণা এটিও বলছে যে মানুষ  সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম গুলোর মধ্যে ইউটিউবে সব থেকে বেশি সময় ব্যয় করে থাকে।

বর্তমানে ইউটিউবে আপনি একটি জনপ্রিয় চ্যানেল তৈরি করার মাধ্যমে মিলিয়ন ডলার উপার্জন করতে পারেন। আপনি যদি আপনার চ্যানেলে নিয়মিত ভিডিও আপলোড করেন এবং আপনার ভিডিও যদি ৪০০০ ঘন্টা দেখার সময়ে পৌঁছায়, তাহলে আপনি আপনার চ্যানেলের জন্য গুগল এডসেন্সের আবেদন করতে পারবেন। এজন্য এটি স্বল্পসময়েই নতুন বিজনেস আইডিয়া হিসেবে খেতাব অর্জন করেছে।

  • শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট ব্যবসা

বর্তমানে  শিক্ষা এবং ট্রেনিং সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ার মাধ্যমে ভালো পরিমাণ লাভ করা সম্ভব। তাই শিক্ষিত বেকার জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশ বর্তমানে এ দিকে ঝুঁকছে।

আপনারা চাইলে বিভিন্ন একাডেমিক কোচিং সেন্টার এবং স্কিল ডেভেলপমেন্ট ট্রেইনিং  ইনস্টিটিউট   তৈরি করে সেখান  মোটা অংকের মুনাফা অর্জন করতে পারেন। আপনি যদি শিক্ষিত হন এবং আপনার বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষতা রয়েছে তাহলে আপনার জন্য এটি হতে পারে যথাযথ একটি বিজনেস আইডিয়া।

  • ফটোগ্রাফি

একবিংশ শতাব্দীতে প্রমাণিত হয়েছে যে ফটোগ্রাফি একটি ভালো ব্যবসা হতে পারে। আপনার যদি ডিএসএলআর ক্যামেরা থাকে এবং  ফটোগ্রাফির প্রতি ভালো প্যাশন থাকে, তাহলে আপনি এটিকে ক্যারিয়ারে পরিণত করতে পারেন। বিভিন্ন পেইড কাজের মাধ্যমে দৈনিক অনেক অর্থ উপার্জন করার অনেক সুযোগ রয়েছে। অনেক বিখ্যাত সাইট আছে যেখানে আপনি আপনার ফটোগ্রাফি বিক্রি করতে পারেন। 

বর্তমানে  ওয়েডিং ফটোগ্রাফির মাধ্যমেও প্রচুর অর্থ উপার্জন করার সম্ভাবনা গড়ে উঠেছে। যারা ভালো ছবি তোলেন এবং ডকুমেন্টারি করেন তারা মাসে গড়ে ৫০ হাজার টাকার বেশি উপার্জন করে থাকেন। আপনার যদি ডিএসএলআর ক্যামেরা থাকে এবং ভালো ছবি তুলতে পারেন তাহলে আপনি নতুন বিজনেস আইডিয়া হিসেবে এদিকে বেছে নিতে পারেন।

  • ট্যুরিজম ব্যবসা

আমাদের দেশে  ঘুরে দেখার মতো অনেক সুন্দর সুন্দর জায়গা রয়েছে। বান্দরবান, রাঙ্গামাটি ,কক্সবাজার ,সিলেট ,খাগড়াছড়ি ,সুন্দরবন সহ আরো অনেক এরকম জায়গা রয়েছে  যেখানে প্রতিবছর প্রচুর মানুষের ভিড় হয়। এই মানুষগুলো দেশের বিভিন্ন স্থান হতে আসেন। এমনকি দেশের বাইরে হতেও যেসব পর্যটক আসেন তারাও এই জায়গা গুলো উপভোগ করে থাকেন। 

এজন্য  বিজনেস আইডিয়া হিসেবে ট্যুরিজম ব্যবসার চাহিদা  সব সময় থাকবে। এর প্রধান একটি কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ভ্রমণের পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকে না  পর্যটকদের। এই ব্যবসার মাধ্যমে আপনি সেই পর্যটকদের কাস্টমাইজড বা পরিচালিত ট্যুর প্যাকেজ অফার করতে পারেন, যার মাধ্যমে হোটেল বুকিং, ট্রেন এর টিকেট বা জায়গা নির্ধারণ করা ইত্যাদি কাজ করে সেখান হতে প্রচুর পরিমাণে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। গরম শীত কিংবা বর্ষা যেকোনো মৌসুমেই এই ব্যবসার চাহিদা সব সময় রয়েছে।

বিজনেস আইডিয়া

 

কোন ব্যবস্যাটি বেছে নেবেন? 

বিজনেস আইডিয়া ২০২২  হিসেবে  কোন আইডিয়াটিকে বেছে নেবেন এটি সম্পূর্ণ নির্ভর করে আপনার অভিজ্ঞতা,  আগ্রহ এবং মূলধনের ওপর। যদি আপনার অভিজ্ঞতা এবং আগ্রহ থাকে কিন্তু যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে মূলধন না থাকে তাহলে আপনি  যে বিজনেস আইডিয়া নিয়ে কাজ করুন না কেনো আপনি লাভবান হতে পারবেননা।  আবার আপনার যদি মূলধন থাকে কিন্তু কাজের আগ্রহ বা পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকে, কোনো বিজনেস বেশিদিন টিকিয়ে রাখতে পারবেন না। এক গবেষণায় দেখা গেছে অধিকাংশ ব্যবসা এই আগ্রহ, মূলধন এবং অভিজ্ঞতার সমানুপাতিক অবস্থান না থাকার কারণে শুরুতেই মুখ থুবড়ে পড়ে।

এজন্য আপনি সেই বিজনেস আইডিয়া নিয়ে কাজ শুরু করুন যেখানে আপনার পূর্ব অভিজ্ঞতা রয়েছে। পাশাপাশি আপনার ভালো লাগা কাজ করে। আর মূলধনের ব্যাপারটি অনেকটা আপনার উপর নির্ভর করে। শুরুতে আপনি চাইলে স্বল্প মূলধন নিয়ে কাজ শুরু করতে পারেন। এরপর  মুনাফা অর্জনের মাধ্যমে ধীরে ধীরে এর প্রসার করতে পারেন। এছাড়া এখানে মার্কেট এনালাইসিস অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। অর্থাৎ বর্তমানে বাজারে কোন সেক্টরের চাহিদা বেশি  সেটি অনুসারে যদি আপনি ব্যবসা না শুরু করেন তাহলেও অনেকটাই লাভের মুখ না দেখার সম্ভাবনা কমে যায়। এছাড়া আপনি যেই বিজনেস আইডিয়া  নিয়ে আপনার ব্যবসা শুরু করবেন যেখানে আপনি দ্রুত কাস্টমার রেসপন্স,  কানেক্টিভিটি তৈরি করা মান সম্পন্ন প্রোডাক্ট  এবং সার্ভিস দেওয়ার মানসিকতা রাখবেন।

পরিশেষে এটুকু বলা যায়, বিশ্বে বেশিরভাগ মানুষের আয় আসে ব্যবসা হতে। অনেক মানুষের কর্মক্ষেত্র এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। উপরে উল্লেখিত লাভজনক বিজনেস আইডিয়া  গুলো আপনাকে সঠিক ব্যবসাটি বেছে নিতে সাহায্য করবে।যেকোন ব্যবসা শুরুর আগে সঠিক পরিকল্পনা করে নেবেন, কারণ এটি আপনাকে আপনার পণ্যের প্রচারণা ও বিক্রি  বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে। 

আর্টিকেলটি ভালো লাগলে ঘুরে আসুন আমাদের ফেসবুক পেইজ থেকে!

Leave a Comment