আপনি যদি এমন একটি অনলাইন আয়ের উপায় সম্পর্কে জানতে চান, যেটিতে এখনো প্রতিযোগিতা অনেক কম এবং সঠিকভাবে শিখতে পারলে ভালো পরিমাণ টাকা আয় করা সম্ভব, তাহলে আমাজন এফবিএ সম্পর্কে লেখা এই আর্টিকেলটি পড়তে পারেন।
যারা অনলাইন শপিং বা ই-কমার্স সম্পর্কে আইডিয়া রাখেন, তারা আমাজনকে নিশ্চয়ই চেনেন। আমাজন হচ্ছে একটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান, যেটি বর্তমানে বিশ্বের অনেকগুলো দেশে সফলভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ১৯৯৪ সালের জুলাইতে আমাজনের যাত্রা শুরু হয়েছিল ছোট্ট একটি অনলাইন বুকস্টোরের মাধ্যমে। তবে এখন এটি বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম ও জনপ্রিয় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান হিসেবে রূপান্তরিত হয়েছে। আমাজন এফবিএ (Amazon FBA) হলো আমাজনের বিশেষ একটি সার্ভিস, যেটির মাধ্যমে বিজনেস ওনাররা আমাজনে তাদের বিজনেসের প্রোডাক্ট সেল করার সুবিধা পেয়ে থাকেন। আজকের লেখায় আপনাদেরকে জানাবো আমাজন এফবিএ (What is Amazon FBA in Bangla) সম্পর্কে বিস্তারিত। তাহলে চলুন দেরি না করে শুরু করা যাক।
আমাজন এফবিএ কী? (What is Amazon FBA in Bangla)
অ্যামাজন এফবিএ এর পূর্ণরূপ হচ্ছে ফুলফিলমেন্ট বাই অ্যামাজন। একদম সহজ ভাষায় আমাজন এফবিএ হচ্ছে যারা ই-কমার্স বিজনেস করতে চান তাদেরকে টার্গেট করে আমাজন কর্তৃক প্রদত্ত একটি সার্ভিস, যে সার্ভিস নেয়ার মাধ্যমে অনলাইন সেলাররা আমাজনের সাহায্যে আরো সহজে বিজনেস করতে পারেন।
অর্থাৎ, আপনি আমাজন এফবিএ সার্ভিস নেয়ার মাধ্যমে আপনার বিজনেসের বিভিন্ন প্রোডাক্ট আমাজনে সেল করতে পারবেন। এক্ষেত্রে এই সার্ভিস নেয়ার সবচেয়ে সুবিধাজনক বিষয়টি হলো এখানে লজিস্টিকসের পুরো বিষয়টি আমাজন হ্যান্ডেল করে। অর্থাৎ আপনার প্রোডাক্ট পিক করা ,প্যাকিং করা এবং আমাজনের নিজস্ব ফুলফিলম্যান্ট সেন্টার থেকে আপনার প্রোডাক্ট কাস্টমারদের কাছে শিপ করে দেয়া এই সব কাজই আমাজন করে থাকে। তাই ই কমার্সের অন্যান্য মডেলগুলোর তুলনায় আমাজন এফবিএ বেশ আলাদা বলা যেতে পারে।
Amazon FBA লঞ্চ হওয়ার পর থেকে সবার ভেতরেই এটি বেশ সাড়া ফেলে দিয়েছে। কেন জানেন? বলছি! যেকোনো অনলাইন বিজনেসে লজিস্টিকস অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যেহেতু আমাজনের এফবিএ সার্ভিসটি নিলে আপনাকে লজিস্টিকস রিলেটেড কোন কাজই করতে হবে না, তাই আপনার ব্যবসার হ্যাসেলও অনেক কমে আসবে। ফলে আপনি নিজের বিজনেস গ্রো করানোর পেছনে সময় ও শ্রম দুটোই দিতে পারবেন।
আমাজন এফবিএ কিভাবে কাজ করে?
চলুন এবার আরেকটু সহজ করে বোঝার চেষ্টা করা যাক কিভাবে আমাজন এফবিএ কাজ করে।
এক্ষেত্রে শুরুতেই সেলাররা তাদের ইনভেন্টরি বা প্রোডাক্টের কালেকশন আমাজন ফুলফিলমেন্ট সেন্টারে পাঠিয়ে দেয়। তারপর আমাজনে যারা ফুলফিলমেন্ট সেন্টারের দায়িত্বে রয়েছেন তারা সেই ইনভেন্টরি রিসিভ করেন, সর্টিং করেন এবং স্টোর করে রাখেন।
তারপর আমাজনের মার্কেটপ্লেস থেকে যখন কোন কাস্টমার ওই সেলারের প্রোডাক্ট অর্ডার করেন ,তখন ফুলফিলমেন্ট সেন্টার থেকে তার প্রোডাক্ট যথাযথভাবে প্যাকিং করার পর ওই কাস্টমারের অ্যাড্রেসে শিপ করে দেয়া হয়। এক্ষেত্রে কাস্টমার সার্ভিস কিংবা প্রোডাক্ট রিটার্ন ইস্যু ক্রিয়েট হলে সেটিও আমাজন থেকেই সলভ করা হয়।
এখন আপনারা প্রশ্ন করতে পারেন, যদি এই গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো আমাজনই করে দেয়, তাহলে যারা সেলার বা বিজনেস ওনার রয়েছেন, তাদের কাছে কতটুকু কন্ট্রোল থাকে? এবার আসি সে বিষয়টিতে।
আমাজনের এফবিএ সার্ভিসের মাধ্যমে আপনি কোন প্রোডাক্ট গুলো সেল করবেন সেই ডিসিশন আপনি নিজেই নিতে পারবেন। যেহেতু আমাজনে প্রায় সব ধরনের প্রোডাক্ট সেল করা হয়, তাই আপনি যে ধরনের প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করতে চান না কেন, তা করার সুযোগ রয়েছে।
তবে হ্যাঁ, যদি প্রফিট মার্জিন বেশী রাখতে চান, সেক্ষেত্রে যে প্রোডাক্টগুলোর ডিমান্ড অনেক বেশি, সেগুলোই সেল করার জন্য বেছে নেয়ার পরামর্শ থাকবে। এছাড়াও আমাজন ফুলফিলমেন্ট সেন্টারে আপনি কতোটুকু কোয়ান্টিটির প্রোডাক্ট স্টক করে রাখবেন সেটিও আপনি ঠিক করতে পারবেন।
এর পাশাপাশি আপনি কিভাবে আপনার প্রোডাক্টের মার্কেটিং করবেন সে বিষয়েও আমাজন এফবিএ থেকে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। আপনি চাইলে ফেসবুক মার্কেটিং, ইনস্টাগ্রাম মার্কেটিং কিংবা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার মাধ্যমে পটেনশিয়াল কাস্টমারদের আপনার কাছ থেকে প্রোডাক্ট পারচেজ করার জন্য ইনফ্লুয়েন্স করতে পারেন। আবার চাইলে আমাজনের যে নিজস্ব অ্যাডভার্টাইজিং প্রোগ্রাম রয়েছে সেটির সাহায্যেও আপনার প্রোডাক্ট প্রমোট করতে পারেন।
আমাজন এফবিএ সার্ভিস কিভাবে ব্যবহার করবেন? (How to use Amazon FBA in Bangla)
আমাজন এফবিএ সার্ভিস নেয়ার জন্য কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করতে হয়। তবে এই সার্ভিস নেয়ার আগে আপনাদের যে কাজটি করতে হবে সেটি হলো আপনারা কোন নিশের প্রোডাক্ট সেল করবেন সেটি নির্ধারণ করে ফেলতে হবে। এই সিদ্ধান্তটি যথেষ্ট রিসার্চ করার পর নিতে হবে। কারণ কোন ধরনের প্রোডাক্ট সেল করবেন সেটির ওপরেই অনেকটুকু নির্ভর করে আপনি সাকসেসফুল হতে পারবেন কিনা।
- তাই শুরুতে একটি নিশ সিলেক্ট করে নিন। তারপর প্রোডাক্ট রিসার্চ করা শুরু করুন। এক্ষেত্রে কোন প্রোডাক্টগুলো বেস্ট সেলিং সেগুলো খুজে বের করার চেষ্টা করুন। বিশেষ করে যে প্রোডাক্টগুলোর মূল্য ১০ থেকে ৫০ ডলারের ভেতর এবং পপুলারিটি অনেক বেশি , সেই প্রোডাক্টগুলো সেল করার জন্য বেছে নেওয়া সেফ অপশন। এছাড়াও প্রোডাক্ট সার্চ করে সেগুলোর রেটিং বা রিভিউ পড়েও প্রোডাক্ট সিলেক্ট করতে পারেন।
- প্রোডাক্ট সিলেক্ট করার পরের কাজটি হলো অথেন্টিক সাপ্লায়ার খুঁজে বের করা। মনে রাখবেন, আপনার প্রোডাক্টের কোয়ালিটি যত ভালো হবে, সেল জেনারেট হওয়ার সম্ভাবনাও তত বেশি থাকবে। তাই যখন সাপ্লায়ার খুঁজবেন, যিনি বেস্ট তাকেই খুঁজে বের করুন।
- তারপর Amazon.com ওয়েবসাইটে গিয়ে Sell On Amazon অপশনে ক্লিক করে আপনার ইনফরমেশন প্রোভাইড করে অ্যাকাউন্ট ক্রিয়েট করতে হবে। তারপর অ্যাকাউন্টে FBA সার্ভিস অ্যাড করার পরেই আপনারা প্রোডাক্ট সেল করার জন্য কাজ করতে পারবেন।
- যখন আপনার অ্যাকাউন্ট রেডি হয়ে যাবে, তারপরের কাজটি হলো প্রোডাক্ট লিস্টিং তৈরি করা। এটি করার জন্য আমাজনের সেলার সেন্ট্রাল অ্যাকাউন্টের ইনভেন্টরি মেনু থেকে Add Product অপশনে ক্লিক করতে হবে। তারপর Create a Product Listing এ ক্লিক করে আপনি যে ক্যাটাগরির প্রোডাক্ট সেল করতে চান তা সিলেক্ট করতে হবে। সবশেষে Save and Finish এ ক্লিক করলেই প্রোডাক্ট লিস্টিং রেডি হয়ে যাবে।
- এবার যে প্রোডাক্টগুলো আমাজনের ফুলফিলমেন্ট সেন্টারে স্টক করতে চান, সে প্রোডাক্টগুলো সঠিকভাবে প্যাক করে লেবেলিং করুন, যেন সেগুলো ফুলফিলমেন্ট সেন্টারে ঠিকভাবে পৌছে যায়। তারপর আমাজনের একটি শিপিং প্ল্যান ক্রিয়েট করে শিপমেন্ট আইডির লেবেল প্রিন্ট করে আপনার প্রোডাক্টগুলো ফুলফিলমেন্ট সেন্টারের উদ্দেশ্যে শিপ করে দিন৷
ব্যস্য! তারপর নিজের প্রোডাক্টের মার্কেটিং করার কাজটি ভালোভাবে ধৈর্যসহকারে চালিয়ে যান। যদি সঠিকভাবে মার্কেটিং করতে পারেন, তাহলে দেখবেন খুব দ্রুতই আপনার প্রোডাক্ট সেল হয়ে যাচ্ছে। মূলত এভাবেই আমাজন এফবিএ সার্ভিস ইউজ করা যায়।
Read More
আমাজন এফবিএ এর সুবিধা
চলন এখন জেনে নেয়া যাক আমাজন এফবিএ আপনাদেরকে কি কি সুবিধা অফার করছে। এই সার্ভিসের সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে এটিতে অর্ডার ফুলফিলমেন্ট এর পুরো দায়িত্ব আমাজনের। অর্ডার ফুলফিলমেন্ট হচ্ছে একজন কাস্টমার কোন একটি প্রোডাক্ট অর্ডার করার পর সেটি তার কাছে পৌঁছে দিতে যে কাজগুলো করতে হয়। যেমন: ওয়্যারহাউজ থেকে প্রোডাক্ট পিক করা, সর্টিং করা, প্রোডাক্ট প্যাক করে কাস্টমারের অ্যাড্রেসে শিপ করে দেয়া, পার্সেল ট্র্যাক করা, কাস্টমার সাপোর্ট প্রোভাইড করা, রিটার্ন বা রিফান্ডের মত সমস্যাগুলো সলভ করা ইত্যাদি।
এই কাজগুলো যদি একজন বিজনেস ওনার নিজে করতে চান, তাহলে তার খরচের পরিমাণ যেমন অনেক বেশি হবে, সেই সাথে কিন্তু সময় ও এফোর্ট দুটোই বেশি দিতে হবে।
আমাজন এফবিএ সার্ভিস নিলে এদিক থেকে অনেক সুবিধা পাওয়া যায়। কারণ প্রথমত লজিস্টিকস রিলেটেড সব কাজ, এমনকি কাস্টমারদের প্রোডাক্ট রিফান্ড ও রিটার্ন রিলেটেড কাজগুলোও আমাজন থেকে হ্যান্ডেল করা হয়। সেই সাথে আমাজনের কাস্টমার কেয়ার সার্ভিস ২৪ ঘন্টাই চালু থাকে। তাই কাস্টমারদের প্রশ্নের উত্তর দেয়া ,তাদের কোন প্রবলেম সলভ করা বা তাদের কোন কমপ্লেইনে রেসপন্স করার কোন কাজই আপনাকে করতে হবে না।
তাই এই সার্ভিস নিলে আপনারা হাতে এক্সট্রা অনেক সময় পাবেন, যে সময়ে আপনারা বিজনেসের মার্কেটিং স্ট্রাটেজি ডেভলপ করতে পারবেন, হাই কোয়ালিটির প্রোডাক্ট সোর্সিং করতে পারবেন কিংবা প্রোডাক্ট এর কোয়ালিটি কিভাবে ইমপ্রুভ করা যায় সেদিকে ফোকাস করতে পারবেন।
তাছাড়া আপনারা নিশ্চয়ই জানেন, অনলাইন বিজনেস করতে গেলে স্টক করার জন্য ওয়ারহাউজ থাকা প্রয়োজন। এই ওয়্যারহাউজ নিতে গেলে প্রতিমাসে ভালো অ্যামাউন্টের ভাড়া দিতে হয়, আবার দেখভাল করার জন্য এমপ্লয়িও রাখতে হয়, যাদেরকে প্রতিমাসে স্যালারি পে করতে হয়।
যেহেতু আমাজনের এফবিএ সার্ভিসটি নিলে আপনি আপনার ইনভেন্টরির সব প্রোডাক্ট আমাজনের ফুলফিলমেন্ট সেন্টারে স্টক করে রাখতে পারবেন, তাই বাড়তি টাকা খরচ করে ওয়্যারহাউজ নেওয়ার কোন প্রয়োজন নেই। তাই আপনারা বুঝতেই পারছেন, সার্ভিস মিলে আপনারা অনেকগুলো টাকা সেভ করতে পারবেন।
শুধু তাই নয়, যদি আপনারা কোন শিপিং কোম্পানির সাহায্য নিয়ে আপনাদের প্রোডাক্ট ডেলিভার করতে চান, সেক্ষেত্রে কাস্টমারদেরকে বেশি শিপিং চার্জ পে করতে হবে। এতে করে কিন্তু কাস্টমার হাতে ছাড়া হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যদি আমাজন এফবিএ সার্ভিস নেন, তাহলে অনেক কম শিপিং চার্জে কাস্টমাররা আপনার থেকে প্রোডাক্ট অর্ডার করতে পারবেন, যা তাদের স্যাটিসফ্যাকশন বাড়াবে।
একইসাথে আপনি যদি আমাজনের এফবিএ প্রোগ্রামের অংশ হয়ে থাকেন, হলে সার্চ রেজাল্টে আপনার প্রোডাক্ট দ্রুত র্যাংক করার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকবে। তাই সেল জেনারেট হওয়ার সম্ভাবনাও বেশি থাকবে।
আমাজনের এফবিএ সার্ভিস এর আরেকটি বড় সুবিধা হচ্ছে সার্ভিসের মাধ্যমে আপনারা শুধুমাত্র একটি দেশের মধ্যেই নয়, বরং ইন্টারন্যাশনালি নিজের বিজনেসের প্রোডাক্ট সেল করতে পারবেন। আপনারা নিশ্চয়ই জানেন, যদি দেশের বাইরে নিজের ব্যবসা বাড়াতে চান, সেক্ষেত্রে ইনভেস্টমেন্ট ও রিসোর্স দুটো বাড়ানোর পাশাপাশি কিন্তু প্রচুর পরিশ্রমও করতে হয়। আর সাকসেসফুল না হওয়ার রিস্ক তো রয়েছেই।
বর্তমানে বিভিন্ন দেশে আমাজনের ফুলফিলমেন্ট সেন্টার সেট আপ করা রয়েছে বিধায় আপনারা চাইলে এই সার্ভিসের মাধ্যমে নিজেদের বিজনেস গ্লোবালি বাড়ানোর চেষ্টা করে দেখতে পারেন, কারণ এখানে লস হওয়ার চান্স তুলনামূলকভাবে অনেক কম।
আমাজন এফবিএ এর অসুবিধা
এবার আসি আমাজন এফবিএ সার্ভিস এর কয়েকটি অসুবিধা নিয়ে। এই সার্ভিসের অন্যতম অসুবিধা হলো এই সার্ভিস দিতে গেলে বিভিন্ন রকম ফি দিতে হয়। যেমন পিকিং এন্ড প্যাকিং ফি, মান্থলি স্টোরেজ ফি, লং টার্ম ফি, অর্ডার ফুলফিলমেন্ট ফি ইত্যাদি , যা দেয়া অনেকের পক্ষেই অসুবিধার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। বিশেষ করে যাদের ব্যবসা একদমই নতুন, তারা ফি দিতে বেশ ভোগান্তির শিকার হন।
সেই সাথে এই সার্ভিসের কোন ফ্রি ট্রায়াল অপশন না থাকায় সবাইকে ফি প্রদান করে একাউন্ট খুলতে হয়। তাই যদি কোন কারণে সার্ভিস নেয়ার পর কারো সেল জেনারেট না হয়, তাহলে তিনি যেই টাকা দিয়ে সার্ভিস সাবস্ক্রাইব করেছেন ,সেই পুরো টাকা নষ্ট হবে। আশা করি আপনারা আমাজন এফবিএ এর অসুবিধা গুলো বুঝতে পেরেছেন।
আমাজন এফবিএ আপনার জন্য পারফেক্ট কিনা কিভাবে বুঝবেন?
এবার আসি আমাজন এফবিএ কাদের জন্য পারফেক্ট তা নিয়ে।
যদি আপনার অনলাইন বিজনেস একদম নতুন হয়ে থাকে, তাহলে কিন্তু আমাজনের এই সার্ভিসটি আপনার জন্যে মোটেও উপযোগী নয়। কারণ নতুন অবস্থায় বিজনেসে খুব বেশি অর্ডার আসে না। তাই যদি আপনি আমাজন এফবিএ সার্ভিস নেয়ার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেনও, তাহলেও খুব বেশী অর্ডার পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। বরং যদি আপনার বিজনেসের প্রতিমাসে ৫০টির বেশি অর্ডার থাকে, তাহলে সেল আরো বাড়ানোর জন্য আমাজন এফবিএ সার্ভিস নিতে পারেন।
আপনার বিজনেসের প্রোডাক্টের ধরন কেমন সেটির ওপরেও নির্ভর করে আমাজন এফবিএ আপনার জন্য পারফেক্ট হতে পারে কিনা সে বিষয়টি। যেমন ধরুন :আপনার প্রোডাক্টের সাইজ ছোট কিন্তু যদি সেটির প্রাইস বেশি হয়, তাহলে আপনি এই সার্ভিস নিলে প্রফিট জেনারেট করতে পারবেন। তবে আপনার প্রোডাক্ট যদি সাইজে বড় কিন্তু কম প্রাইসের হয়, তাহলে আপনি এই সার্ভিস নিয়ে খুব বেশী লাভবান হতে পারবেন না। কারণ আপনার প্রোডাক্টের সাইজের উপর আমাজনের এফবিএ সার্ভিসের ফী নির্ধারণ করা হয়। তাই আপনার প্রোডাক্টের প্রাইস কম ও সাইজ বেশি হলে এই সার্ভিস না নেয়ার পরামর্শ থাকবে।
যদি এমন হয় যে কাস্টমারদের কাছে আপনার বিজনেসের প্রোডাক্টের ডিমান্ড অনেক, কিন্তু আপনি তাদেরকে প্রোডাক্ট ডেলিভারি করতে স্ট্রাগল করছেন, কারণ লজিস্টিকস সাপোর্ট দেয়ার মত যথেষ্ট লোকবল আপনার নেই, সেক্ষেত্রে আমাজনে এফবিএ আপনার জন্য একটি ভালো চয়েস হতে পারে। কেননা আমি আগেই বলেছি, এই সার্ভিসটি নিলে লজিস্টিকস নিয়ে আপনাদেরকে ভাবতে হবেনা।
এটুকুই ছিল আমাদের আজকের আলোচনা। সত্যি বলতে আমাজন এফবিএ সম্পর্কে বাংলাদেশ সেভাবে আলোচনা হয় না। তাই চেষ্টা করেছি আপনাদেরকে সহজ ভাষায় প্রতিটি বিষয় ব্যাখ্যা করতে। যদি এমন তথ্য বহুল আর্টিকেল আরো পড়তে চান, তাহলে আমাদের সাথেই থাকুন।
আর্টিকেলটি ভালো লাগলে ঘুরে আসুন আমাদের ফেসবুক পেইজ থেকে!