২৮ জুন কালের কণ্ঠ পত্রিকার প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশের বর্তমান জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯১ লাখ। Wikipedia থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে এদের মধ্যে শতকরা ৬০ জন মানুষ ০-২৫ জনের বয়স বছরের মধ্যে। আজ কথা বলবো শিশুদের স্মার্ট ফোন ব্যবহারের নানা দিক নিয়ে।
সাধারণত ১৮ বছরের নিচে জনসংখ্যাকে বাংলাদেশে শিশু হিসেবে ধরা হয়। দেশের এই বিশাল জনসংখ্যাকে প্রযুক্তি বিহীন রেখে দেশকে ডিজিটাল ভাবা বা দেশের উন্নতি কামনা করা আমাদের জন্য উচিত হবে না। অনেকেই এই কথার বিরোধিতা করে হয়তো বলবেন প্রযুক্তি ব্যবহারের অবাধ স্বাধীনতা দেওয়া হলেও তাদের থেকে ভালো ফল আশা করা অনুচিত হবে। উচিত আর অনুচিত এর মধ্যে যে জায়গায় ভারসাম্য রক্ষা করা যায় সেখান থেকেই আমাদের পথচলা শুরু করা দরকার।
অনেক অভিভাবক প্রযুক্তি ব্যবহারকে নিজের শিশুর জন্য কল্যাণ মনে করেন। শিশু কাঁদলে তাকে শান্ত করার জন্য তার হাতে তুলে দেওয়া হয় স্মার্ট ফোন, অন করা টেলিভিশন, ট্যাব অথবা ল্যাপটপ।
কিন্তু শিশুদের ভবিষ্যত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে সেদিকে খেয়াল রাখছেন না অনেকেই। শিশুদের স্মার্ট ফোন ব্যবহার থেকে দেশে দেশে উদ্যোগ গ্রহণ করছেন অভিভাবকেরা। বড়দের উদাসীনতার কারণে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে অসংখ্য শিশুর স্বপ্নিল ভবিষ্যত্।
বিশেষজ্ঞদের মতে,”শিশুদের হাতে স্মার্ট ফোন দেওয়ার অর্থ তাদের হাতে তুলে দেওয়া এক বোতল মদ অথবা এক গ্রাম কোকেন।” কারণ স্মার্ট ফোনের আসক্তি মাদকাসক্তির মতোই। দুই মিনিট স্থায়ী একটি মোবাইল কল শিশুর মস্তিষ্কে হাইপার অ্যাক্টিভিটি সৃষ্টি করতে পারে যা কিনা তার মস্তিষ্কে এক ঘণ্টাকাল স্থায়ী হয়। এছাড়া হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা বেড়ে যায় দ্বিগুণ, মেজাজ হয় খিটখিটে, ব্যবহারকারীর স্নায়ু দুর্বল হয়ে যায়, রাতের ঘুমে হয় তীব্র অশান্তি।
এত সমস্যা মোকাবিলা করে যখন একটা শিশু বেড়ে উঠতে চেষ্টা করে তখন তার ব্যর্থ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে দ্বিগুণ। বেশির ভাগ শিশুরা মোবাইলে গেম খেলতে পছন্দ করে। এই ধরনের শিশুদের সংখ্যা আমাদের দেশে এতো বেশী যে অদূর ভবিষ্যতে আমরা একটা মহামারীর মুখোমুখি হতে পারি। আর তা হবে মস্তিষ্ক ক্যান্সার।
করোনাকালীন সময়ে আমরা দেখেছি যে, স্মার্ট ফোনের কল্যাণে ছাত্র ছাত্রীরা নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিত হতে পারছে। কিন্তু কতটুকু সময় ক্লাসে ব্যয় করছে আর কতটুকু সময় ফেসবুকে, ইউটিউবে বা অন্য ওয়েবসাইটে সে অভিভাবকদের সচেতন হওয়া একান্তই কাম্য। শিশুদের প্রযুক্তি ব্যবহারের ভারসাম্যপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করা এখন সময়ের চাওয়া।
লেখক: নাহিদ হাসান জোয়ার্দার
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
অর্থনীতি,২য় বর্ষ।