অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে বাড়িতে বসে 1 মাসে 1000 ডলারের ওপর আয় করতে চাইলে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের Super effective স্টেপ বাই স্টেপ গাইডলাইনটি পড়ে ফেলুন ঝটপট!

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে কি আসলেই প্রতি মাসে হাজার হাজার ডলার আয় করা সম্ভব? যারা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে জানেননা- তাদের সবার মনে কিন্তু এ প্রশ্নটি সবসময় চলতে থাকে।  আজকের আর্টিকেলে আমরা এই প্রশ্নটির উত্তর খুঁজে বের করার চেষ্টা করবো। 

কিন্তু তার আগে আমি অনলাইনে আয় সম্পর্কে কিছু বলতে চাই। আজকে থেকে কয়েক বছর আগেও কিন্তু অনলাইনে আয় করার উপায় সম্পর্কে মানুষ তেমন কিছু জানতোনা। মানুষ মনে করত টাকা আয় করার জন্য বোধহয় অফিসে বসে কাজ করতে হয় কিংবা কোথাও বসে ব্যাবসা করতে হয়। কিন্তু বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তির উন্নতির ফলে কিন্তু টাকা আয় করার কাজটি ঘরে বসেও করা সম্ভব। এখন অনলাইনে আয় করার অনেক উপায় রয়েছে। যেমনঃ অনলাইন বিজনেস, ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি, ফ্রিল্যান্সিং ইত্যাদি।  

এসব অনলাইনে আয়ের উপায়ের মাধ্যমে যেমন বাড়িতে বসে স্বাধীনভাবে কাজ করা যায়, তেমনি এসব কাজের মাধ্যমে প্রতি মাসে যে পরিমাণ টাকা আয় করা সম্ভব, সেটির পরিমাণে কিন্তু নিতান্ত কম নয়। তবে এসবের পাশাপাশি বর্তমানে আরও একটি অনলাইনে আয় করার উপায় কিন্তু অত্যন্ত জনপ্রিয়। সেটি হলো অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। 

তবে এক্ষেত্রে যেটি আপনাদের না বললেই নয়, সেটি হচ্ছে আপনি কখনোই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে সাকসেসফুল হতে পারবেননা যদি আপনি এই মার্কেটিং করার নিয়ম গুলো ঠিকমতো না জানেন।  তাই আজকের লেখায় আমি বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি ও কিভাবে করতে হয়, এটি কেন শিখবেন, কিভাবে শিখবেন এবং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে প্রতি মাসে কত টাকা আয় করা যায় সে সম্পর্কে৷ সাথে থাকবে এই মার্কেটিংয়ে সফল হওয়ার জন্য কিছু বিশেষ টিপস।  তাই যারা এই মার্কেটিং করছেন অথবা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের ব্যাপারে জানতে চান তাদের সবার জন্যই পরামর্শ থাকবে এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য৷

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি? 

শুরুতেই চলুন জেনে আসা যাক অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কাকে বলে। সহজ কথায় অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হলো কোন প্রতিষ্ঠানের কোন একটি প্রোডাক্ট কিংবা সার্ভিস তাদের হয়ে কাস্টমারদের কাছে সেল করা। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের জন্য সবচাইতে পরিচিত প্লাটফর্ম গুলো হলো নিজের ওয়েবসাইট, সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যাকাউন্ট অথবা ইউটিউব চ্যানেল। এই তিনটির মধ্যে ওয়েবসাইটের মধ্যে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করা হলে সেটির সাকসেস রেট সবচাইতে বেশি। 

এখন নিশ্চয়ই আপনাদের মনে প্রশ্ন জাগবে যে এই মার্কেটিং করে আপনার লাভটা কোথায়? এবার সে প্রশ্নের উত্তরটি দিয়ে দিচ্ছি। যখন আপনি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে কোন কোম্পানির প্রোডাক্ট বা সার্ভিস কাস্টমারদের কাছে সেল করে দিতে পারবেন, তখন প্রতিটি সেলের জন্য তারা আপনাকে একটি নির্দিষ্ট পার্সেন্টেজে কমিশন দেবে। এই কমিশন থেকেই মূলত অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মূল ইনকাম এসে থাকে। কি?কমিশনের ব্যাপারটি বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে? আসুন একটি উদাহরণের সাহায্যে বুঝিয়ে বলি।  

 

ধরুন, আপনি কোন একটি কোম্পানির প্রোডাক্টের অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে চান। এখন সেই প্রোডাক্টের দাম যদি ২০০ টাকা হয় এবং প্রতিটি সেলের জন্য যদি কমিশনের পার্সেন্টেজ ৫ পার্সেন্ট হয়, তাহলে আপনি যখন প্রোডাক্টটি সেল করবেন, তখন প্রতিটি সেলের জন্য আপনি ২০০ টাকার ৫% অর্থাৎ ১০ টাকা কমিশন হিসেবে পাবেন। এভাবে আপনি যত বেশি কাস্টমারের কাছে প্রোডাক্ট সেল করতে পারবেন, তত বেশি কমিশন পেতে থাকবেন এবং তত বেশি আয় করতে পারবেন৷।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর জনপ্রিয়তার অন্যতম কারণ হলো এই মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে আপনি প্রতি মাসে কত টাকা আয় করতে পারবেন সেটির কোন বাঁধাধরা হিসাব নেই। এমনও হতে পারে আপনি ৫০০ ডলার আয় করলেন আবার এমনও হতে পারে আপনি ২ হাজার ডলার আয় করলেন। এটির পুরোটুকুই নির্ভর করে আপনি কতটুকু ইফোর্ট দিয়ে কাজটি করবেন এবং কতটুকু দক্ষতার সাথে করবেন এই দুটি বিষয়ের ওপর। 

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং প্রথমে বাইরের দেশগুলোতে জনপ্রিয় থাকলেও বর্তমানে বাংলাদেশের অনেকেই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের সাথে নিজেদের যুক্ত করেছেন এবং প্রতি মাসে হাজার হাজার ডলার আয় করছেন।  

কোন ধরণের প্রোডাক্ট নিয়ে মার্কেটিং করা হয়? 

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি সেটি তো বললাম। এবার আসা যাক কোন কোন ধরনের প্রোডাক্ট নিয়ে এই মার্কেটিং করতে পারবেন সে সম্পর্কে। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এমন এক ধরনের মার্কেটিং যেটি ফিজিক্যাল প্রোডাক্ট অথবা ডিজিটাল প্রোডাক্ট দুটির মাধ্যমেই করা যেতে পারে। এখানে ফিজিক্যাল প্রোডাক্ট বলতে আমি বুঝিয়েছি বিভিন্ন ইলেকট্রনিক প্রোডাক্ট,ড্রেস,জুয়েলারি, কসমেটিকস, হাউজহোল্ড প্রোডাক্ট ইত্যাদি৷ 

আর ডিজিটাল প্রোডাক্ট বলতে আমি বুঝিয়েছি কোন অনলাইন কোর্স, ইলেকট্রনিক বুক বা ই-বুক, কোন ওয়েবসাইটের ডোমেইন-হোস্টিং ইত্যাদি প্রোডাক্ট।  মোটকথা কোন একটি প্রতিষ্ঠান চাইলে ফিজিক্যাল বা ডিজিটাল উভয় ধরনের প্রোডাক্টের জন্যই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের সুবিধাটি চালু রাখতে পারে।  এছাড়াও বর্তমানে লিড জেনারেশন করার মাধ্যমে অনেক এই মার্কেটিং করে থাকেন। 

কিছু অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের ওয়েবসাইট

এবার আমি আপনাদের জানাবো জনপ্রিয় কিছু অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ওয়েবসাইট নিয়ে। এক্ষেত্রে আমি আন্তর্জাতিক এবং বাংলাদেশি দুই ধরনের ওয়েবসাইটের ব্যাপারেই জানাবো। যদি আন্তর্জাতিক অ্যাফিলিয়েট সাইট নিয়ে বলতে চাই, তাহলে শুরুতেই আসে আমাজনের নাম।  আমাজনের অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামের নাম শোনেননি  এমন মানুষের সংখ্যা বর্তমানে খুব কম।  বর্তমানে কাস্টমারদের কাছে আমাজনের জনপ্রিয়তা এবং আমাজনের কমিশন রেটের কারনে এই অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামটি সবার মাঝে খুব জনপ্রিয়। তবে আমাজনের পাশাপাশি থিমফরেস্ট, ইবে, আলিবাবা ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানেও কিন্তু অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার সুযোগ রয়েছে। 

এবার আসা যাক বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান নিয়ে।  বাংলাদেশ আফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য বিডি শপ, বহুব্রীহি কিংবা টেন মিনিট স্কুলের মত সাইটগুলোকে বেছে নিতে পারেন। যদি আপনি ইলেকট্রনিক পণ্য বা গেজেট এর উপর অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে আগ্রহী থাকেন তাহলে আপনি বিডি শপ নামক সাইটটি বেছে নিতে পারেন। এই সাইটটি যথেষ্ট রিলায়েবলও বটে। এছাড়া যদি আপনি ডিজিটাল প্রোডাক্টের ওপর আগ্রহী থাকেন তাহলে টেন মিনিট স্কুল অথবা বহুব্রীহি বেছে নিতে পারেন। এই দুটি ওয়েবসাইট মূলত বিভিন্ন অনলাইন কোর্স ইত্যাদি সেল করে থাকে।

ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে জানতে পড়ুনঃ

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের সুবিধা ও এটি করা কিভাবে শিখবেন? 

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার মূল সুবিধা হচ্ছে এই মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই বাড়িতে বসে লং-টার্মের জন্য বড় অংকের টাকা উপার্জনের সুযোগ পাবেন। এ মার্কেটিং এমন এক ধরনের মার্কেটিং যেখানে হতে পারে আপনি কাজ করছেন না কিন্তু তখনও আপনার ইনকাম হতে থাকবে। কারণ এই মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে প্যাসিভ ইনকাম হয়ে থাকে।  

তাছাড়া আপনি যদি একজন দক্ষ অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার হয়ে থাকেন, তাহলে আপনি বিভিন্ন বড় বড় কোম্পানির সাথে কাজ করার সুযোগ পাবেন৷  সবচেয়ে বড় কথা এই কাজে নিজের স্বাধীনতা বিদ্যমান রেখেই আপনি কাজ করতে পারবেন। আর যেহেতু এই মার্কেটিংয়ের ইনকাম আসে মূলত কমিশনের ওপর থেকে, তাই যদি  বেশি বেশি কাস্টমারের কাছে আপনি প্রোডাক্ট কিংবা সার্ভিস সেল করতে পারেন, তাহলে প্রতি মাসে ১০০০ থেকে কয়েক হাজার ডলার পর্যন্তও আয় করা সম্ভব।

এবার আমি আপনাদের জানাব অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শিখবেন সে সম্পর্কে। বিনামূলে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শেখার জন্য আপনি চাইলে গুগলের বিভিন্ন ফ্রী রিসোর্সের সাহায্য নিতে পারেন। আপনি যখন গুগলে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে করা যায় সে সম্পর্কে সার্চ করবেন, তখন দেখতে পাবেন বিভিন্ন কোয়ালিটি সম্পন্ন রিসোর্স রয়েছে। তবে এ রিসোর্সের বেশিরভাগই ইংরেজি ভাষায় হওয়ায় আপনাকে ইংরেজিতে একটু দক্ষ হতেই হবে।  এখানে রিসোর্স বলতে আমি বুঝিয়েছি বিভিন্ন ইংরেজি ভাষার ব্লগ যেগুলোতে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে করতে হয় সে সম্পর্কে ধাপে ধাপে দেখানো হয়েছে।  চাইলে সেগুলো পড়তে পারেন। 

আবার এখন যেহেতু ইউটিউবে বিনামূল্যে বিভিন্ন ভিডিও দেখার সুযোগ রয়েছে, তাই চাইলে এই মার্কেটিং কিভাবে করবেন সে সম্পর্কে ইউটিউবে সার্চ করতে পারেন।  তখন দেখবেন বাংলা এবং ইংরেজি উভয় ভাষাতেই বিভিন্ন ভিডিও রয়েছে। চাইলে এসব ভিডিও দেখতে পারেন।

আর যদি আপনি কিছু টাকা খরচ করার মাধ্যমে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করা শিখতে চান এবং আপনি চান কোন একজন মেন্টরের আন্ডারে থেকে ধাপে ধাপে হাতে-কলমে মার্কেটিং শিখবেন, তাহলে বলবো এই মার্কেটিং শেখায় এমন কোন ইনস্টিটিউশনে ভর্তি হতে।  তবে বরাবরের মতই আমি আপনাদেরকে পরামর্শ দেবো, যে ইন্সটিটিউশনেই ভর্তি হোন না কেন,  ভর্তি হওয়ার আগে পর্যাপ্ত রিসার্চ করে নেবেন যেন টাকা দিয়ে ভর্তি হয়ে পরবর্তীতে কোনভাবেই পস্তাতে না হয়।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

 

কিভাবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করবেন?

এবার আমি কথা বলব আজকের লেখার সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ অংশ নিয়ে, যেটি হলো অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে করতে পারেন। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার কয়েকটি ধাপ রয়েছে। এ ধাপগুলো যদি সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে পারেন তাহলে আপনি এই মার্কেটিং এ সাকসেসফুল হতে পারবেন।  তাই চলুন দেরী না করে জেনে আসা যাক সেই ধাপগুলো সম্পর্কে। 

০১। যেকোনো একটি নিশ সিলেক্ট করে নেয়া

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের প্রথম ধাপ হচ্ছে নিশ সিলেক্ট করা। নিশ হচ্ছে আপনি কোন ধরনের প্রোডাক্ট নিয়ে মার্কেটিং করবেন সেটি সিলেক্ট করে ফেলা। সত্যি বলতে একজন কখনোই সব ধরনের প্রোডাক্ট নিয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারবেননা। তাই সবাইকে যেকোনো এক ধরনের প্রোডাক্ট কিংবা নিশ সিলেক্ট করে নিতেই হবে। 

নিশ সিলেকশনের করার সময় আপনি নিজের পছন্দ এবং আগ্রহ মাথায় রাখার পাশাপাশি বর্তমানে কোন ধরনের প্রোডাক্ট গুলোর চাহিদা কাস্টমারের কাছে সবচাইতে বেশি সেটিও মাথায় রাখতে পারেন। যেমনঃ যারা আমাজন নামক সাইটে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করেন, তারা কিন্তু মার্কেটিং শুরু করার আগে সেই সাইটে পর্যাপ্ত রিসার্চ করে নেন যে কোন ধরনের প্রোডাক্টগুলোর চাহিদা কাস্টমারদের কাছে সবচেয়ে বেশি। অর্থাৎ কোন ধরনের প্রোডাক্টের মার্কেটিং করলে কাস্টমাররা সেগুলো বেশি করে কিনবেন, তারা সেটি শুরুতে রিসার্চ করে নেন। এবং সে অনুযায়ী তারা নিশ সিলেক্ট করে ফেলেন। 

এটি যে শুধু আমাজনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য তা নয়, বরং আপনি যে সাইটেই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে থাকুন আপনাকে নিশ সিলেকশন শুরুতেই করে নিতে হবে।

০২। নিশ অনুযায়ী ওয়েবসাইট তৈরি করা 

আমি লেখার শুরুর দিকে বলেছি, যদি আপনি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে থাকেন, সেক্ষেত্রে আপনার সাকসেসফুল হওয়ার চান্স অনেক বেড়ে যাবে। তাই যখন নিশ সিলেক্ট করে ফেলবেন তার পরপরই আপনার কাজ হবে ডোমেইন -হোস্টিং কেনা এবং নিশ অনুযায়ী ওয়েবসাইট ডিজাইন করে ফেলা। আর যারা ওয়েবসাইট ছাড়া এ মার্কেটিং করতে চান, তাদের জন্য পরামর্শ থাকবে নিশ অনুযায়ী সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট অথবা ইউটিউব চ্যানেলে সেটআপ করা। 

ফিরে আসি ওয়েবসাইটে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের পরবর্তী কাজ নিয়ে। যখন আপনি নিশ অনুযায়ী ওয়েবসাইট ডিজাইন করে ফেলবেন তখন আপনাকে ঠিক করতে হবে যে আপনি ওই নিশের কোন কোন প্রোডাক্টের ওপর মার্কেটিং করতে চান। তারপর সেই প্রোডাক্টের লিস্ট বানিয়ে ফেলতে হবে। 

০৩। অ্যাফিলিয়েট সাইটে রেজিষ্ট্রেশন করা 

নিশ সিলেক্ট করার পর সে নিশ রিলেটেড প্রোডাক্টের অ্যাফিলিয়েট সাইটে রেজিষ্ট্রেশন করে ফেলতে হবে। অ্যাফিলিয়েট সাইটে রেজিস্ট্রেশন করার পর সেই সাইট থেকে প্রতিটি প্রোডাক্টের জন্য আপনাকে একটি কাস্টম ইউআরএল বা লিংক প্রোভাইড করা হবে।  এই লিংকটি কপি করে আপনি আপনার ওয়েবসাইটে অথবা সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্টে বা ইউটিউবের ভিডিওতে বসাবেন, যেখান থেকে পরবর্তীতে কমিশন পাওয়া শুরু হবে।

০৪। নিশ রিলেটেড প্রোডাক্টের ব্যাপারে কন্টেন্ট পাবলিশ করা 

আপনারা কি জানেন ওয়েবসাইটে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড়  চ্যালেঞ্জ কোনটি? সেটি হচ্ছে উন্নত মানের প্রোডাক্ট রিভিউ কন্টেন্ট সাইটে পাবলিশ করা। যখন আপনি নিশ সিলেকশন করার পর সেই নিশরিলেটেড প্রোডাক্টগুলো সিলেক্ট করে ফেলবেন, অ্যাফিলিয়েট সাইটেও রেজিষ্ট্রেশন করে ফেলবেন, তখন আপনার কাজ হলো সাইটে নিয়মিত ভাবে সেই প্রোডাক্টের রিভিউ লিখে পোস্ট করা, যাতে করে  কাস্টমাররা সে প্রোডাক্ট গুলো কিনতে আগ্রহী হন। 

এই পোস্ট করা কনটেন্টগুলোতেই অ্যাফিলিয়েট সাইট থেকে জেনারেট হওয়া কাস্টম লিংকগুলোকে পেস্ট করতে হয়। এই পেস্ট করা লিংকে যদি কাস্টমাররা প্রবেশ করে কেনাকাটা করেন সেইক্ষেত্রে আপনি নির্দিষ্ট রেটে কমিশন পাবেন৷ 

অ্যাফিলিয়েট ওয়েবসাইটে ভালো মানের কন্টেন্ট লেখার টিপস

কোন একটি প্রোডাক্টের রিভিউ যখন লিখবেন, তখন সেটির ভাষা যেন যথেষ্ট সহজবোধ্য হয়, সেটি অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। কারণ যারা এ প্রোডাক্টের রিভিউগুলো পড়বেন, তারা এগুলো পড়ার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে চান যে তারা একটি  প্রোডাক্ট বা সার্ভিস পারচেজ করবেন কিনা।  

তাই কখনোই কোনো কঠিন বা দুর্বোধ্য শব্দ ব্যবহার করে কনটেন্ট লিখবেন না। পাশাপাশি কনটেন্টের গ্রামার ও বাক্যের স্ট্রাকচার যেন ঠিকমতো হয় সেটিও খেয়াল রাখবেন। অন্য কোন ওয়েবসাইটের কনটেন্ট চুরি করে সেগুলো নিজের সাইটে পাবলিশ করা থেকে বিরত থাকবেন।

 

০৫। কন্টেন্টে এসইও করা

যখন আপনি কন্টেন্ট পোস্ট করবেন, সে কনটেন্টগুলো যেন এসইও ফ্রেন্ডলি হয় সেটিও খেয়াল রাখতে হবে। কারণ যদি আপনার লেখা কন্টেন্ট যদি সার্চ ইঞ্জিন ফ্রেন্ডলি না হয়, তাহলে কিন্তু আপনি যত ভালো কনটেন্টই পাবলিশ করুন না কেন, সেগুলো সার্চ ইঞ্জিনে র‍্যাংক করবেনা। ফলে কাস্টমাররা সেই সাইটে ভিজিট করতে পারবেনা এবং এটি পরবর্তীতে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের সাকসেসের পথে অনেক বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে।  তাই যদি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে সাকসেসফুল হতে চান, তাহলে প্রোডাক্টের রিভিউ কন্টেন্টগুলো যেন উন্নত কোয়ালিটির হয় সেটি খেয়াল রাখবেন। যদি নিজে লিখতে পারেন তাহলে নিজে লিখবেন, অথবা কোন দক্ষ কন্টেন্ট রাইটারকে হায়ার করে লিখিয়ে নেবেন।  

মনে রাখবেন যদি আপনার সাইটে পোস্ট করা কনটেন্টগুলো সার্চ ইঞ্জিনে ব্যাংক করে, তাহলে সেখান থেকেই আপনি সাইটে প্রচুর ভিজিটর পাবেন। এই ভিজিটরদের মধ্যেই অনেকে আপনার পোস্ট করা লিংকে প্রবেশ করে সেই প্রোডাক্ট অথবা সার্ভিসগুলো পারচেজ করবে।  যেখান থেকেই আপনি কমিশন পাবেন এই এবং এ কমিশনের মাধ্যমে আপনার আয় বাড়া শুরু হবে।

এভাবেই ধাপে ধাপে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে হয়। এ মার্কেটিংয়ে সফলতা পাওয়ার জন্য আমি বাড়তি টিপস হিসেবে বলবো সোশ্যাল মিডিয়াতে নিজের ওয়েবসাইট প্রোমোট করতে। এতে করে আরো বেশি ভিজিটর পাওয়া যাবে৷

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে কত টাকা আয় করা যায়? 

একজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার কত টাকা আয় করবেন সেটি তার নিজের দক্ষতা ও চেষ্টার ওপর পুরোপুরিভাবে নির্ভরশীল। মনে রাখবেন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে  সফলতা আসা শুরু হয় ধীরে ধীরে। যেহেতু এ ধরনের মার্কেটিং একটি প্যাসিভ ইনকাম সোর্স, তাই সাইটে ভালো পরিমাণ ভিজিটর থাকলে আপনার সাইট যতদিন থাকবে, ততদিনই আপনি ইনকাম করতে পারবেন। তাই যদি শুরুতেই একটু ধৈর্য্য নিয়ে কাজ করেন তাহলেই কি কয়েক মাস যাওয়ার পরেই আপনি ভালো ফল পেতে শুরু করবেন। হয়তো এই মার্কেটিং শুরু করার প্রথমদিকে সেভাবে ইনকাম হবে না। 

কিন্তু যখন আপনি কয়েক মাস ধৈর্য ও পরিশ্রমের সাথে কাজ করবেন, তখন দেখবেন প্রতি মাসে ঘরে বসে আরামসে আপনি হাজার হাজার ডলার ইনকাম করতে পারবেন। বাংলাদেশেই এমন অনেক অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার রয়েছেন যারা প্রতি মাসে দুই থেকে তিন হাজার ডলার পর্যন্ত আয় করছেন।  তারা কিন্তু এক রাতের ব্যবধানেই এত টাকা আয় করতে সক্ষম হননি। বরং তারা দীর্ঘ সময় ধরে তাদের সাইটের পিছনে পরিশ্রম করেছেন এবং ধৈর্য ধরে সময় দিয়েছেন। এ কারণে আমি বলবো যদি একজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার হিসেবে নিজের ক্যারিয়ার বিল্ডআপ করতে চান, তা হলে পরিশ্রম করার মাইন্ডসেট নিয়ে এগোতে প্রস্তুত থাকুন৷

এটুকুই ছিল অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে আজকের বিস্তারিত দিকনির্দেশনা। আশা করি যারা একজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার হিসেবে নিজের ক্যারিয়ার বিল্ডাপ করতে চান, তারা এই আর্টিকেল থেকে উপকৃত হয়েছেন। 

আর্টিকেলটি ভালো লাগলে ঘুরে আসুন আমাদের ফেসবুক পেইজ থেকে!

Leave a Comment