যত দিন যাচ্ছে নতুন প্রজন্মের মধ্যে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার দৃঢ় প্রচেষ্টা লক্ষ করা যাচ্ছে। তারা নিজেদের চেষ্টায় বিভিন্ন ছোট-বড় বিজনেস দাঁড় করানোর চেষ্টা করছে। ড্রপশিপিং নতুনদের জন্য খুবই প্রফিটেবল একটি বিজনেস মডেল যেটিতে আগে থেকে কোথাও প্রোডাক্ট স্টকে এনে রাখতে হয়না, কম ইনভেস্টমেন্ট থাকলেও শুরু করা যায় এবং অন্যান্য বিজনেসের তুলনায় কম এফোর্ট দিয়েও খুব তাড়াতাড়ি সাফল্যের স্বাদ পাওয়া সম্ভব হয়। যারা ড্রপশিপিং করেন তাদেরকে ড্রপশিপার বলা হয়। ড্রপশিপিং বিজনেস নিয়ে এখনকার জেনারেশনের কৌতুহলের শেষ নেই।
সত্যি বলতে সীমিত ইনভেস্টমেন্টে অধিক লাভ করতে পারা সম্ভব এমন বিজনেস মডেলগুলোর মধ্যে একটি হলো ড্রপশিপিং। বর্তমানে অনেকেই রয়েছেন যারা এই প্রবল সম্ভাবনাময় বিজনেসের সাথে নিজেদের যুক্ত করছেন। তবে আমাদের আশেপাশে অনেকেই রয়েছেন যারা কিভাবে ড্রপশিপিং বিজনেস শুরু করা যেতে পারে কিংবা ঠিক কোথা থেকে শুরু করলে সফল হওয়া সম্ভব হবে এ বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানেননা। আবার অনেক সময় দেখা যায়, অনেকেই চেষ্টা এবং পরিশ্রম দুটো থাকা সত্ত্বেও এ বিজনেসে লাভবান হতে পারেননা। আজকের লেখায় আমি ড্রপশিপিং বিজনেস কি, কিভাবে এই বিজনেস শুরু করা যেতে পারে এবং কি কি টিপস ফলো করলে এই বিজনেসে লং-টার্মে সাফল্য অর্জন করা যায় সেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
ড্রপশিপিং বিজনেস কি?
সোজা বাংলায় ড্রপশিপিং এর অর্থ হলো এটি এমন একটি ইউনিক বিজনেস মডেল যেটিতে আপনি কোনো প্রডাক্ট স্টক না করে সেগুলো সরাসরি প্রডাক্টের সাপ্লায়ারের মাধ্যমে কাস্টমারদের কাছে সেল করতে পারবেন৷ এটি মূলত একটি অনলাইন বেইজড বিজনেস মডেল যেটির জনপ্রিয়তা এখন অনেক বেশি। এই বিজনেস মূলত দুই ভাবে করা হয়ে থাকে। যেগুলো হলো নিজের ওয়েবসাইট তৈরির মাধ্যমে শপিফাই, ইবে কিংবা আমাজন ড্রপশিপিং প্লাটফর্মে স্টোর ক্রিয়েট করার মাধ্যমে।
বিষয়টি আরেকটু ভালোমতো বোঝার সুবিধার্থে আমি একটি সহজ উদাহরণের সাহায্যে এ বিজনেস মডেলটি আপনাদের কে বোঝানোর চেষ্টা করছি। ধরুন আপনার সব পাওয়া যায় ডটকম নামের একটি ড্রপশিপিং ওয়েবসাইট রয়েছে। সে ওয়েবসাইটটিতে আপনি বিভিন্ন রকম পণ্য সেল করে থাকেন। এখন অন্যান্য বিজনেসের থেকে আপনার বিজনেসের পার্থক্য হচ্ছে যখন কোন কাস্টমার আপনার এই ওয়েবসাইটটি থেকে কোনো পণ্য অর্ডার করে তখন সে পণ্যটি আপনার স্টকে রাখতে হয়না। কারণ আপনি কাস্টমারের অর্ডার করা সে প্রোডাক্টটি সরাসরি প্রোডাক্টের সাপ্লাইয়ার কিংবা ম্যানুফ্যাকচারারের মাধ্যমে কাস্টমারকে পৌঁছে দিতে পারেন। এভাবে এ বিজনেসটি পরিচালিত হয়ে থাকে।
ড্রপশিপিং অনলাইন বিজনেস এর সুবিধা কী কী?
ড্রপ শিপিং বিজনেস কি সেটাই তো বললাম, চলুন এবার জেনে আসা যাক এ বিজনেসের সুবিধা গুলো কি কি। এই বিজনেস এর মূল সুবিধাই হলো এটিতে অন্যান্য বিজনেসের মতো বেশি অংকের টাকা ইনভেস্ট করার প্রয়োজন হয়না৷ তাই যদি আপনার অল্প পরিমাণ মূলধন থাকে, তাহলে আপনি চোখ বন্ধ করে সেটি দিয়েই বিজনেস শুরু করে দিতে পারেন।
ড্রপশিপিং বিজনেসের এত জনপ্রিয়তার পেছনে আরেকটি কারণ হচ্ছে এই বিজনেসে আপনাকে কখনোই কোনো পণ্য স্টক করে রাখতে হবে না। তাই আপনার যদি অন্য স্টক করার মতন জায়গা না থাকে কিংবা কোনো ওয়ারহাউজ না থাকে তাহলে কোন অসুবিধা নেই। পাশাপাশি এই বিজনেস সম্পূর্ণ অনলাইনভিত্তিক হওয়ায় আপনি চাইলে নিজের বাড়িতে বসেই এটির কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন। সুতরাং বুঝতেই পারছেন এ বিজনেস অন্যান্য বিজনেস গুলোর তুলনায় অনেক বেশি সুবিধাজনক এবং লাভজনক।
কিভাবে ড্রপশিপিং বিজনেস শুরু করবেন?
ড্রপশিপিং বিজনেস শুরু করে সাকসেস পেতে চাইলে আপনাদের কিছু নির্দিষ্ট স্টেপ অনুসরণ করতে হবে। তাই চলুন দেরি না করে সে স্টেপগুলো সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।
০১। ড্রপশিপিংয়ের ভালোমতো কনসেপ্ট বুঝে নিজের মাইন্ডসেট করা
ড্রপশিপিং একটি অতি পরিচিত ই- কমার্স প্ল্যাটফর্ম হলেও অনেকেই এ বিজনেসের আদ্যোপান্ত না জেনেই এ বিজনেস শুরু করে ফেলেন৷ দেখা যায় তারা এ বিজনেসে মেইন কনসেপ্টই ধরতে পারেননা। ফলে দেখা যায় পরবর্তীতে তারা বেশিদিন টিকে থাকতে পারেননা।
ড্রপশিপার হওয়ার পথে এমন ঘটনা যেন না ঘটে সেটি নিশ্চিত করতে প্রথমেই প্রয়োজন এ বিজনেসের কনসেপ্ট পুরোপুরি বুঝে তারপর মাইন্ডসেট করে কাজ করতে আসা। বিগিনারদের সুবিধার্থে আবারো বলছি, ড্রপশিপিং বিজনেসের মূল সুবিধাই হলো এ বিজনেসে কখনোই আপনাকে কোনো প্রোডাক্ট আগে থেকে স্টকে এনে জমিয়ে রাখতে হবেনা। সুতরাং আপনারা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন ড্রপশিপিং করতে হলে আপনাদেরকে যেকোনো একটি ড্রপশিপিং প্ল্যাটফর্ম বেছে নিতে হবে অথবা নিজের ওয়েবসাইট বানাতে হবে। ড্রপশিপিংয়ের বিভিন্ন জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্মের মধ্যে ইবে, আমাজন, শপিফাই, উকমার্স ইত্যাদি অন্যতম। এই প্ল্যাটফর্মগুলোর প্রতিটিরই কিছু সুবিধা ও অসুবিধা রয়েছে। তাই ড্রপশিপার হতে চাইলে এগুলোর প্রতিটির সুবিধা এবং অসুবিধা সম্পর্কে জানতে হবে।
এছাড়াও এ বিজনেস করতে চাইলে আরো কিছু বেসিক বিষয় যেমনঃ কাস্টমার রিসার্চ, প্রোডাক্ট রিসার্চ ইত্যাদি বিষয়ে যথেষ্ট ধারণা রাখতে হবে। পাশাপাশি পেমেন্ট গেটাওয়ে সম্পর্কেও জেনে আসতে হবে নতুবা কাজ করার সময় অনেক রকম ঝামেলায় পড়ার সম্ভাবনা থেকে যাবে।
ড্রপশিপিং সম্পর্কে পর্যাপ্ত রিসার্চ করার পর যদি বুঝতে পারেন এ বিজনেস আপনার জন্য পারফেক্ট, শুধুমাত্র তখনই ড্রপশিপার হওয়ার জন্য মাইন্ডসেট করুন। এতে করে বিজনেসে চলার পথে তেমনভাবে ঝামেলায় পড়তে হবেনা।
০২।নিশ রিসার্চ এবং প্রোডাক্ট রিসার্চ করা
ড্রপশিপিং বিজনেসে নিশ রিসার্চ এবং প্রোডাক্ট রিসার্চ কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ এটি বলে বোঝানো সম্ভব নয়। আসলে কেউ সাকসেসফুল ড্রপশিপার হতে পারবেন কিনা এটি নির্ভর করে নিশ রিসার্চ এবং প্রোডাক্ট রিসার্চ কতটুকু গুরুত্বের সাথে করা হয়েছে সেটির ওপর।
নিশ রিসার্চে মূলত কোন ক্যাটাগরির প্রোডাক্ট স্টোরে সেল করা হবে সেটি ডিসাইড করা হয়। অন্যদিকে প্রোডাক্ট রিসার্চের মাধ্যমে একটি নিশের আন্ডারে থাকা বিভিন্ন প্রোডাক্টের মধ্যে কোন প্রোডাক্টগুলো সেল করা হবে সেটির ব্যাপারে রিসার্চ করা হয়। অর্থাৎ নিশ রিসার্চ হলো নিজের বিজনেসের জন্য প্রোডাক্ট ক্যাটাগরি খুজে পাওয়ার রিসার্চ এবং প্রোডাক্ট রিসার্চ হলো একটি নিশের যে প্রোডাক্টগুলো স্টোরের জন্য বেছে নেয়া হবে সেগুলো খুঁজে বের করার রিসার্চ।
নিশ রিসার্চের সময় কোন নিশগুলো ট্রেন্ডিং নিশের তালিকায় রয়েছে সেগুলোর লিস্ট ইন্টারনেট থেকে দেখে নেবেন। এরপর সেগুলোর মধ্যে যে নিশ নিয়ে কাজ করতে নিজে কনফিডেন্ট ফিল করবেন সে নিশটিই বেছে নেবেন। পরবর্তীতে যখন প্রোডাক্ট রিসার্চ করতে যাবেন, তখন যারা কম্পিটিটর রয়েছে তাদের স্টোরে ঘাটাঘাটি করে দেখে বোঝার চেষ্টা করবেন কোন ধরণের প্রোডাক্ট সেল করলে বেশি প্রফিট পেতে পারেন। ড্রপশিপার হওয়ার জন্য এই স্টেপটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ তাই এ স্টেপে অবশ্যই ভালো পরিমাণ সময় ব্যয় করে বুঝেশুনে ডিসিশন নেবেন।
আরো পড়ুনঃ বিটকয়েন কি? বিটকয়েন কিভাবে কাজ করে? বিটকয়েন থেকে বিকাশ কিভাবে টাকা তোলা যায়?Best Guideline 2022
০৩।সাপ্লাইয়ার খোঁজা
ড্রপশিপিং বিজনেসে কাস্টমারকে প্রোডাক্ট ডেলিভারির ব্যাপারটির সাথে সাপ্লাইয়ারের ব্যাপারটি সরাসরি রিলেটেড। কারণ সাপ্লাইয়ার যদি ভালো না হয় এবং ভালো কোয়ালিটির প্রোডাক্ট দিতে না পারে, তাহলে কাস্টমারের সামনে আপনার ইমপ্রেশন কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে সেটি আর নাইবা বললাম।
জেনে রাখা ভালো, ড্রপশিপিং বিজনেসে রিটেইল এবং হোলসেল এ দুই ধরনের সাপ্লাইয়ার থাকেন যাদের মধ্যে হোলসেল সাপ্লাইয়ার বেছে নেয়াই ভালো। রিটেল সাপ্লাইয়ারে প্রোডাক্টের কোয়ালিটি যাচাইয়ের সুযোগ থাকেনা, ফলে যদি কাস্টমারের কাছে লো কোয়ালিটির প্রোডাক্ট চলে যায় সেটির ব্যাপারে কিছুই করার থাকেনা। কিন্তু হোলসেল সাপ্লাইয়ার বেছে নিলে কাস্টমারদের হাতে ভালো কোয়ালিটির প্রোডাক্ট পৌঁছে দেয়া সম্ভব হয়৷
এখনকার ইন্টারনেটের যুগে গুগলে সার্চ দিলেই বিভিন্ন সাপ্লাইয়ারের লিস্ট পেয়ে যাবেন৷ সেখান থেকে সাপ্লাইয়ার বাছাই করতে পারেন কিংবা এক্সপার্ট কাউকে জিজ্ঞেস করেও ভালো সাপ্লাইয়ারের খোঁজ পেতে পারেন।
০৪। লিগ্যাল কাগজপত্র তৈরি করা
বিজনেস করতে গেলে কিছু লিগ্যাল কাগজপত্র থাকা প্রয়োজন। যেমনঃ একটি ট্রেড লাইসেন্স। ট্রেড লাইসেন্স থাকার অর্থ আপনার বিজনেস বৈধ এবং এই বিজনেসে কোনরকম বেআইনি কাজ করা হয় না। তাই এই কাগজটি রেডি করতে হবে৷ পাশাপাশি বিজনেসের রেজিস্ট্রেশনও সেরে ফেলতে হবে দ্রুত। এক্ষেত্রে নিজের সুবিধামতো একমালিকানাভিত্তিক, অংশীদারী অথবা কোম্পানি হিসেবে রেজিস্ট্রেশন করতে পারেন। তবে আমি এক্ষেত্রে বলবো এক্সপার্ট কারো সাথে শুরুতে কথা বলে নিন। এতে নিজেরই আইনি কাজগুলো সেরে ফেলতে সুবিধা হবে।
০৫। ড্রপশিপিং স্টোর তৈরি করা
ড্রপশিপার হওয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্টেপ হলো ড্রপশিপিং স্টোর তৈরি করা। বর্তমানে শপিফাই, ইবে ইত্যাদি বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ড্রপশিপিং করার সুযোগ রয়েছে। যদি আপনার ইনভেস্টমেন্ট কম থাকে, ওয়েবসাইট কিভাবে তৈরি করতে হয় সেটি জানা না থাকে, একইসাথে প্রোডাক্ট মার্কেটিংয়ের পেছনে বেশি টাকা খরচ করতে না চান তাহলে ইবেতে ড্রপশিপিং করতে পারেন। আবার যদি আপনার মোটামুটি ভালো পরিমাণ ইনভেস্টমেন্ট থাকে, রিস্ক নেয়ার মেন্টালিটি থাকে, ওয়েবসাইট তৈরি এবং কোডিং জানা থাকে তাহলে শপিফাই বেছে নিতে পারেন। তবে যে প্ল্যাটফর্মেই ড্রপশিপিং করুননা কেন, সবসময় নিজের পুরোটুকু এফোর্ট দিন।
০৬। প্রোডাক্ট সেল করা
ড্রপশিপার হওয়ার ফাইনাল স্টেপ হলো প্রোডাক্ট সেল করা। যেহেতু ড্রপশিপিং একটি ই-কমার্স বিজনেস মডেল তাই এই বিজনেসে প্রোডাক্ট সেল করার জন্য অন্য ড্রপশিপারদের চেয়ে ইউনিক মার্কেটিংয়ের কোন বিকল্প নেই। তাই সবসময় চেষ্টা করুন ইউনিক কিছু করে কাস্টমারদের দৃষ্টি আপনার স্টোরের ওপর নিতে।
ড্রপশিপিং বিজনেস প্রোডাক্টের সেল বাড়ানোর কিছু সিক্রেট টিপস
- প্রোডাক্টের সেল বাড়াতে ড্রপশিপিং স্টোরে কিংবা ওয়েবসাইটের প্রোডাক্ট ডেসক্রিপশন ডিটেইলে লেখা খুবই জরুরি। প্রোডাক্ট ডেসক্রিপশন কাস্টমারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে অনেক সাহায্য করে। প্রোডাক্ট ডেসক্রিপশন লেখার সময় সবসময় চেষ্টা করবেন অন্য কাউকে দিয়ে না লিখিয়ে কিংবা কপি পেস্ট না করে সেটি নিজে লেখার৷ কেননা যখন নিজের বিজনেসের জন্য প্রোডাক্ট ডেসক্রিপশন লিখবেন, তখন স্বাভাবিকভাবেই সেটি ইউনিক হবে৷ চেষ্টা করবেন যতটুকু সম্ভব সহজবোধ্য ভাষায় এবং বিস্তারিতভাবে প্রোডাক্ট ডেসক্রিপশন লিখতে। এটি করলে দেখবেন সেল আপনা আপনি ই বাড়তে শুরু করবে।
- যারা ড্রপশিপিংয়ে নতুন, তাদের মনে একটি ভুল ধারণা রয়েছে। সেটি হলো তারা মনে করেন প্রোডাক্ট প্রাইসিং যত লো রাখা হবে, বিজনেসে সেল বাড়ানো ততই সহজ হয়ে যাবে৷ কিন্তু বাস্তবিকপক্ষে এটি সত্যি নয়। বরং ড্রপশিপিং বিজনেসে প্রোডাক্ট প্রাইসিং এমনভাবে করতে হবে, যাতে করে সেটি খুব বেশিও না হয় আবার খুব কমও না হয়। কারণ একটি প্রোডাক্টের প্রাইস অন্যান্য স্টোরের তুলনায় অনেক কম হলে কাস্টমাররা সেটির কোয়ালিটি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। আবার খুব হাই প্রাইসিংয়ের একটি প্রোডাক্ট কাস্টমাররা বাজেট সল্পতার কারণে কিনতে পারেননা। এসব সমস্যা এড়াতে নিজের স্টোরের প্রোডাক্ট প্রাইসিংয়ের আগে একটু রিসার্চ করে বোঝার চেষ্টা করুন সেম নিশের অন্যান্য স্টোরের প্রোডাক্টের প্রাইসিং রেঞ্জ কেমন। এরপর হাই এবং লো প্রাইসিংয়ের মাঝামাঝি রেঞ্জে প্রাইসিং ঠিক করুন। এতে করে দেখবেন ধীরে ধীরে সেল বাড়বে।
- বিজনেস সাকসেসফুল হবে কিনা সেটি অনেকটাই ডিপেন্ড করে কিভাবে বিজনেসের মার্কেটিং করা হচ্ছে সেটির ওপর। ড্রপশিপিং বিজনেসে যেহেতু প্রোডাক্ট স্টোর করার বাড়তি ঝামেলাটুকু নেই, সুতরাং এ বিজনেসে মার্কেটিংয়ের পেছনে সময় দেয়া খুব একটা কঠিন নয়। সবসময় মনে রাখবেন, কাস্টমাররা সবসময় ইউনিক কিছু চায়। তারা দেখতে চায় অন্য ড্রপশিপারদের কাছ থেকে না নিয়ে আপনার স্টোর থেকে প্রোডাক্ট ক্রয় করলে তারা কিভাবে বেনিফিট পেতে পারেন। একারণে অবশ্যই মার্কেটংয়ের ওপর জোর দিন৷ এমনভাবে মার্কেটিং করুন যাতে করে ফেসবুক কিংবা পিন্টারেস্ট যেকোন প্ল্যাটফর্মে আপনার স্টোরের অ্যাড দেখামাত্রই যেন কাস্টমার ইন্টারেস্টেড হয়। কখনোই অন্য স্টোর যা করছে সেসব আইডিয়া কপি করবেননা। বরং নিজে যেটুকু জানেন সেটুকুর ওপর ভরসা রেখে মার্কেটিং করুন৷
- এছাড়াও বিজনেসে সেল বাড়াতে কাস্টমারদের সাথে সঠিকভাবে কমিউনিকেট করুন এবং তাদেরকে উন্নত মানের কাস্টমার সার্ভিস দেয়ার চেষ্টা করুন৷সাধারণত যেসব ড্রপশিপিং স্টোরে কাস্টমার সার্ভিস ভালো, দেখা যায় সেসব স্টোরে কাস্টমারদের কাছ থেকে ড্রপশিপাররা প্রতিনিয়তই অর্ডার পেয়ে থাকেন৷এর কারণ হলো এসব স্টোরে সঠিকভাবে কমিউনিকেট করার মাধ্যমে কাস্টমারদের প্রতিটি কনফিউশান ক্লিয়ার করে দেয়া হয় এবং প্রতিটি কাস্টমারের সাথে সম্মান করে কথা বলা হয়। এতে করে কাস্টমাররা অর্ডার দিতে দ্বিধাবোধ করেননা ৷ এতে করে প্রচুর অর্ডার আসে এবং প্রফিট জেনারেট করা যায়।
এটুকুই ছিলো ড্রপশিপিং বিজনেস নিয়ে আজকের আলোচনা। আমি এখন যারা এই বিজনেসে আসতে চাইছেন তাদের জন্য ছোট্ট একটি সাজেশন দিতে চাই। সেটি হলো, যেকোন বিজনেসে লাভ লোকসান আসবেই৷ ড্রপশিপিং বিজনেস লাভজনক হলেও এর ব্যতিক্রম নয়। তাই যদি শুরুর দিকে হোঁচট খেয়েও যান, আশা হারাবেননা।যখনই কোন বাজে সিচুয়েশন ফেইস করবেন, এই বিজনেসে এক্সপার্ট কারো হেল্প নিতে চেষ্টা করুন। সবসময় নিজের বিজনেসে সততার পরিচয় দিন এবং ধৈর্য্য রাখুন। দেখবেন আপনার ড্রপশিপিং বিজনেসও হয়ে উঠবে সাকসেসফুল।